• হোম > বাংলাদেশ > শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজিরার নির্দেশ

শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজিরার নির্দেশ

  • বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৪
  • ৪৩

---

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে সংঘটিত গুম, খুন এবং জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২১ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এক আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ সময় ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।


গুম-খুনের অভিযোগে পৃথক মামলা

টিএফআই-জেআইসি সেলে সংঘটিত গুম ও খুনের দুটি মামলার পাশাপাশি, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলা বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার ক্ষমতা ব্যবহার করে নিরপরাধ মানুষকে গুম, হত্যা ও নির্যাতন করেছেন।

এ ঘটনায় দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, “এই বিচার প্রক্রিয়া শুধু অপরাধীদের দায় নির্ধারণ নয়, বরং বহু হারিয়ে যাওয়া পরিবারের ন্যায়বিচারের পথ উন্মুক্ত করবে।”


পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ

ট্রাইব্যুনাল গুমের দুই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছে।
এছাড়া, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ৫ নভেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে আদালত জানায়।

চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন,

“আদালত প্রক্রিয়ায় এখন গতি এসেছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব— কে কোন পর্যায়ে দায়ী।”

তিনি আরও জানান, পলাতক আসামিদের হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত বিচার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এতে আদালত ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার’ এক ধাপ এগিয়ে গেল।


ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় গুম পরিবারের আহাজারি

গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলো এই মামলার অগ্রগতিকে নতুন আশার আলো হিসেবে দেখছেন।
দীর্ঘ বছর ধরে অপেক্ষমাণ এক গুম হওয়া তরুণের মা বলেন,

“আমার ছেলেকে হয়তো আর ফিরে পাব না, কিন্তু যদি একটিবারও আদালতে সত্যটা বলা হয়— তাতেই শান্তি পাব।”

মানবাধিকারকর্মীরাও বলছেন, গুম-খুনের মতো গুরুতর অপরাধে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে এই পদক্ষেপ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও ঐতিহাসিক।


মানবাধিকার সংস্থার নজর

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইতোমধ্যেই ট্রাইব্যুনালের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।
তারা বলছে, এটি “বাংলাদেশে জবাবদিহি পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।”

তবে তারা আশা প্রকাশ করেছে, অভিযুক্তদের বিচার যেন স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখেই সম্পন্ন হয়।


প্রসঙ্গত

এর আগে, ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুম-খুনের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
তাদের মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচজন মহাপরিচালক ও সেনা কর্মকর্তারা রয়েছেন।

দেশের ইতিহাসে এই প্রথম এত বড় পরিসরে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, যা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5797 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 11:10:43 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh