• হোম > বাংলাদেশ | বিচার বিভাগ > তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল চেয়ে আপিলে চূড়ান্ত শুনানি শুরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল চেয়ে আপিলে চূড়ান্ত শুনানি শুরু

  • মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:১০
  • ৫৭

---

বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংবিধানিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় — তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা — ফেরানো যাবে কি না, তা নির্ধারণে আজ থেকে শুরু হলো আপিল বিভাগের চূড়ান্ত শুনানি।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।


বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন

শুনানিতে আপিলকারীদের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শরীফ ভূঁইয়া। তিনি বলেন,

“তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ধারার ব্যতিক্রম নয়, বরং এটি ছিল রাজনৈতিক আস্থা ও নির্বাচনের নিরপেক্ষতার ভিত্তি।”

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।


আইনি প্রেক্ষাপট ও পটভূমি

এর আগে গত ২৭ আগস্ট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেন আদালত।

পরবর্তীতে ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ মোট পাঁচজন আপিলকারী এই আবেদন করেন।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনি ইতিহাস

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে, ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল—

“জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিরপেক্ষ ও সব দলের অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।”

তবে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন।

২০০৪ সালের ৪ আগস্ট, হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে সংবিধানসঙ্গত ও বৈধ ঘোষণা করে।

পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়।


রাজনৈতিক তাৎপর্য

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরানোর দাবি বহুদিন ধরেই বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক এজেন্ডার অন্যতম মূল ইস্যু। বিএনপি, জামায়াত, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দল মনে করে—

“তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”

অন্যদিকে সরকারপক্ষের যুক্তি, সংবিধান অনুযায়ী এখন কেবল নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।


আদালতের পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যাশা

আজকের শুনানিতে আদালত পক্ষগুলোকে সময় দিয়েছেন তাঁদের লিখিত উপস্থাপনা ও সংবিধানিক ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য।
চূড়ান্ত শুনানি শেষ হলে আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায়ের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির ভবিষ্যৎ একটি নতুন মোড় নিতে পারে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5764 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 06:52:58 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh