• হোম > দেশজুড়ে > শতাধিক এনজিও প্রকল্প বন্ধ: কাজের পদ্ধতি বদলানোর আহ্বান পরিকল্পনা উপদেষ্টার

শতাধিক এনজিও প্রকল্প বন্ধ: কাজের পদ্ধতি বদলানোর আহ্বান পরিকল্পনা উপদেষ্টার

  • রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৩০
  • ৪৩

---

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইডের সহায়তায় বাংলাদেশে পরিচালিত ১০০টিরও বেশি এনজিও প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে ২০২৫ সালে প্রায় ২০ হাজার কর্মী চাকরি হারাবেন। এমন পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এনজিওদের কাজের মডেল পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারের সঙ্গে এনজিওদের মাঝে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছেন।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের হলরুমে ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’ আয়োজিত ‘বৈশ্বিক ও অন্যান্য কারণে সৃষ্ট অর্থায়ন সংকটের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে এনজিওদের সেবা এমন কোন সেবামূলক ক্ষেত্রে বিস্তৃত হয়নি যা অন্য কোথাও দেখা যায়। তবে ফান্ডিংয়ের সংকট নতুন সমস্যা সৃষ্টি করবে এবং বিদেশি সহায়তা কমে যাবে।” তিনি জানান, সরকারের মধ্যেও এনজিওগুলো কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করে থাকে, যা সময়সীমাবদ্ধ হলেও মাঝে মাঝে সময় বাড়ানো হয়।

ড. মাহমুদ সুপারিশ করেন, এনজিওদের কাজের মডেল বদলাতে হবে এবং স্থানীয় কমিউনিটি বেজড সম্পদগুলো ব্যবহার করতে হবে। যেমন চরাঞ্চল, জলাভূমি ও বনভূমিতে দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। তবে তিনি বলেন, এখানে সরকার ও এনজিওদের মধ্যে সহাবস্থানের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ক্ষমতাহীনরা বাধাগ্রস্ত হতে পারেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন বাংলাদেশে স্থানীয় মানুষদের মোবিলাইজেশন কাজ হবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু যদি দখলদারিত্ব ও অন্যায় প্রভাব থাকে, তাহলে বিদেশি সহায়তার কাজগুলোতে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

উল্লেখ্য, পরিকল্পনা উপদেষ্টা কিছু এনজিওর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে কিছু এনজিও কর্মকর্তা সংগঠনের নামে জমি কিনে নিজ নামে রেকর্ড করেছেন।

সভায় গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এনজিওগুলো দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু অভিযোজনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং দেশের জিডিপিতে পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ অবদান রাখে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক সহায়তা কমে গেছে।

তিনি ওআইসিডির তথ্য তুলে ধরে জানান, বাংলাদেশে বৈদেশিক অনুদান ২০২৩ সালে ৫.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালে ৪.৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসতে পারে, যার ফলে ৫০ হাজার উন্নয়নকর্মী চাকরির ঝুঁকিতে পড়েছেন। তিনি বলেন, এনজিও খাতকে এখন অভ্যন্তরীণ উৎস যেমন করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক উদ্যোগ, প্রবাসী অনুদান ও স্থানীয় তহবিল সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

মতবিনিময় সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

সভায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কান্ট্রি হেড বিটপি দাশ চৌধূরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন, সিপিডির রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, প্রাইভেট সেক্টর, গণমাধ্যম এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১৫০ এর বেশি গণসাক্ষরতা অভিযানের সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5704 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 12:28:25 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh