
বাংলাদেশ সবসময় ওআইসি–এর শ্রম সংক্রান্ত উদ্যোগ ও কর্মসূচির প্রতি আন্তরিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী (১৫–১৬ অক্টোবর) ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ৬ষ্ঠ শ্রমমন্ত্রী সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ উপলক্ষে শুক্রবার এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে বিষয়টি জানানো হয়।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ‘ওআইসি শ্রম কেন্দ্রের সংবিধি’-তে স্বাক্ষর করেছে, যা আমাদের দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা বিশ্বাস করি, ওআইসি সচিবালয় ও শ্রম কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে।”
“স্থানীয় অভিজ্ঞতা, বৈশ্বিক অর্জন : ইসলামী বিশ্বে সাফল্যের গল্প”—এই প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর শ্রমমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক সংস্থা, শ্রম বিশেষজ্ঞ ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রোটোকল অনুস্বাক্ষর করেছে। মৌলিক ১০টি কনভেনশনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৮টি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং বাকি তিনটি—১৫৫, ১৮৭ ও ১৯০—স্বাক্ষরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ তিনটি কনভেনশনও স্বাক্ষরিত হলে, বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ, যারা আইএলও-এর সব মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করেছে।
তিনি আরও বলেন, “শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এডিআর (Alternative Dispute Resolution) চালু করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে এবং ট্রেড ইউনিয়নবিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধে শাস্তির মাত্রা বাড়ানো হচ্ছে।”
পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে শ্রম পরিবেশ উন্নয়নে বাংলাদেশের দৃশ্যমান অগ্রগতি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “আইএলও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিগত এক দশকে কর্মপরিবেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এখন অনেক কারখানায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার, ডে-কেয়ার সেবা, বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইন অনুযায়ী কার্যকর রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সরকার শিগগিরই শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে, যেখানে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে জাতীয় প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট যে ভূমিকা রাখছে, তা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতায় এই ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা আরও বাড়ানো সম্ভব।”
সম্মেলনের মাধ্যমে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শ্রম, কর্মসংস্থান ও সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন।