ইতালির রাজধানী রোমে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও রোমের মেয়র রবার্তো গোয়ালতিয়েরি–র সাক্ষাৎ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এই সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি।
সোমবার দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই সাক্ষাতের প্রটোকল বিষয়ক প্রশ্ন তোলেন।
সাংবাদিকের প্রশ্ন
জুলকারনাইন সামি লিখেছেন—
“প্রশ্ন হলো, কে কার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং কোথায় করলেন? বাংলাদেশের সরকার প্রধান ইতালির রোম শহরের মেয়রের অফিসে গিয়ে সাক্ষাৎ করলেন? নাকি রোম শহরের মেয়র বাংলাদেশের সরকার প্রধানের হোটেল রুমে গিয়ে সাক্ষাৎ করলেন?”
তিনি আরও লেখেন—
“প্রটোকল কী বলে? একটি দেশের সরকার প্রধান অন্য দেশের শহরের মেয়রের অফিসে গিয়ে সাক্ষাৎ করা কি গ্রহণযোগ্য বা যৌক্তিক?”
ছবির তুলনা তুলে ধরে মন্তব্য
তার পোস্টে তিনি দুটি ছবি সংযুক্ত করেন—
একটিতে রোম শহরের মেয়র রবার্তো গোয়ালতিয়েরির অফিসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতি,
অন্যটিতে একই অফিসে ডাবলিন শহরের মেয়র এমা ব্লাইন–এর সাক্ষাতের মুহূর্ত।
এই তুলনা টেনে সাংবাদিক সামি লেখেন,
“দুই ছবির প্রেক্ষাপট দেখলেই বোঝা যায়, এটি রোম মেয়রের অফিস। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায়—এই সাক্ষাৎ কোথায় এবং কার উদ্যোগে হলো?”
সাক্ষাৎ ঘিরে সামাজিক প্রতিক্রিয়া
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই পোস্টটি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
অনেকে মন্তব্য করছেন, “সরকার প্রধানের প্রটোকল আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত, মেয়রের অফিসে সাক্ষাৎ প্রথাবিরুদ্ধ।”
অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, “এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল, এতে বিতর্কের কিছু নেই।”
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানান বৈঠক ও কূটনৈতিক আলোচনায় ব্যস্ত সময় পার করছে।
রোমে তাঁর এই সফরকে অনেকেই মানবিক সহযোগিতা, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদারের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
তবে আল-জাজিরা সাংবাদিকের প্রশ্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রটোকল অনুসরণের বিষয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
উপসংহার
রোমে ড. ইউনূস ও মেয়রের এই সাক্ষাৎ ছিল সৌজন্য নাকি কূটনৈতিক বৈঠক—এ নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা আসেনি।
তবে সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত এই ঘটনা বাংলাদেশের কূটনৈতিক আচরণের নতুন এক অধ্যায় তৈরি করেছে, যেখানে প্রটোকল, মর্যাদা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সীমারেখা নিয়ে জনমত তীব্রভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।