• হোম > বাংলাদেশ > সারা দেশে বজ্রসহ বৃষ্টি, কোথাও ভারি বর্ষণের আশঙ্কা

সারা দেশে বজ্রসহ বৃষ্টি, কোথাও ভারি বর্ষণের আশঙ্কা

  • শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১২
  • ২৩

---

দেশের আকাশে আবারও জমেছে কালো মেঘের ঘনঘটা। শুক্রবার সকালে প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের সব বিভাগেই আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে ভারি বর্ষণ।

এমন পূর্বাভাসের মধ্যেই নগরজীবন থেকে শুরু করে গ্রামীণ জনজীবন—সবখানেই তৈরি হচ্ছে শঙ্কা ও প্রস্তুতি। একদিকে দীর্ঘদিনের গরমের পর এই বৃষ্টি অনেকের কাছে স্বস্তির বার্তা বয়ে আনলেও, অন্যদিকে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ, নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবার ও কৃষকদের কাছে এটি আশঙ্কার খবর।


আবহাওয়ার সারসংক্ষেপ

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বর্তমানে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

এই অবস্থায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায়ও অনুরূপ আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।


বৃষ্টির প্রভাব ও মানবিক দিক

আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা, যানজট, দুর্ঘটনা এবং কর্মজীবীদের চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে ভূমিধসের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, যদি ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে, তবে নদনদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে—যা বর্ষা শেষে নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি করতে পারে।

অন্যদিকে কৃষকদের কাছে এই বৃষ্টি এখন আশীর্বাদ ও উদ্বেগ দুই-ই। একদিকে ধান ও রোপণকৃত শস্যে বৃষ্টির পানি প্রয়োজনীয়, অন্যদিকে অতিবৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।


মানুষের জীবনে ঝুঁকি ও নিরাপত্তা বার্তা

বজ্রপাতের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলেছে—

  • বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে না থাকা,

  • মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা,

  • গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়া,

  • এবং নদী-জলাশয়ে কাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।


প্রকৃতি, জনজীবন ও আশার আলো

যদিও এই বৃষ্টি কোথাও কোথাও দুর্ভোগ বয়ে আনে, তবু প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এর ভূমিকা অপরিসীম। বাতাসের ধুলো ধুয়ে আনে পরিচ্ছন্নতা, গাছপালায় আসে নতুন প্রাণ, কৃষিজমিতে জেগে ওঠে উর্বরতার ছোঁয়া।

বৃষ্টি মানেই কেবল জল নয়—এটি মানুষের জীবনের অংশ, প্রকৃতির পরিশুদ্ধির উপাখ্যান।


উপসংহার

দেশজুড়ে এই বৃষ্টির পূর্বাভাসকে স্বাভাবিক মৌসুমি পরিবর্তন বললেও, প্রতিটি অঞ্চলে সতর্কতা এবং মানবিক প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, আবহাওয়া শুধু সংবাদ নয়—এটি মানুষের জীবন, জীবিকা ও নিরাপত্তার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত এক বাস্তবতা।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5418 ,   Print Date & Time: Friday, 10 October 2025, 08:20:58 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh