আজ বুধবার ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন নিশ্চিত করেছে যে গাজা অভিমুখী একটি নৌবহর ইসরায়েলি বাহিনী দ্বারা আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, সামরিক বাহিনী ‘দ্য কনশেনস’ নামক জাহাজটির দখল নিয়েছে। এই জাহাজে রয়েছেন ৯৩ জন সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মী, যারা মানবিক সহায়তা এবং তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গাজার দিকে যাচ্ছিলেন।
ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগে গাজা অভিমুখী আরও তিনটি ছোট নৌযানকে ইসরায়েলি বাহিনী আটকে দিয়েছে।
জাহাজটিতে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমও রয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, জাহাজটি মাঝসমুদ্রে আটকানো হয়েছে এবং তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন। শহিদুল আলম কনশেনস জাহাজটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (TMTG)-এর অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন।
কনশেনস জাহাজের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙা, মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা। শহিদুল আলমের কথায়, তারা মূলত সেই বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন, যেখানে সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে আটক করেছিল।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, এই অভিযান একটি বৈধ নৌ অবরোধ রক্ষা এবং যুদ্ধাঞ্চলে প্রবেশের ব্যর্থ চেষ্টা হিসেবে শেষ হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, নৌযান ও যাত্রীদের একটি ইসরায়েলি বন্দরে স্থানান্তর করা হয়েছে, যাত্রীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন এবং আশা করা যাচ্ছে দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে।
শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তায় দেখা গেছে, এই অভিযান মানবিক ও সাংবাদিক কর্মকাণ্ডের ওপর সরাসরি বাধা সৃষ্টি করছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য উদ্বেগের কারণ। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই নৌবহরের অংশগ্রহণকারীরা আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছেন, কারণ তারা মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে গাজার দিকে যাচ্ছিলেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে গাজার মানবিক পরিস্থিতি এবং সেখানে সহায়তা পৌঁছানোর পথে থাকা প্রতিবন্ধকতার চিত্র আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হলো। সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা প্রতিদিন মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় রিস্ক নিচ্ছেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক এবং সামরিক অবস্থার কারণে তাদের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
এই ঘটনা ইজরাইল স্বীকার করে বন্দিদেরকে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে।