বলিউডের কিংবদন্তি শাহরুখ খান এখন আনুষ্ঠানিকভাবে বিলিয়নিয়ার ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫ অনুযায়ী, ৫৯ বছর বয়সী এই অভিনেতার সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১.০৩ বিলিয়ন পাউন্ড), যা তাকে বিশ্বের ধনী অভিনেতাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এই অর্জনের মাধ্যমে শাহরুখ খান যুক্ত হয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার, পপ তারকা রিহানা, গলফার টাইগার উডস এবং গায়িকা টেইলর সুইফটের মতো আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে, যাদের সম্পদ ১.৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
বলিউডের অন্যান্য শীর্ষ ব্যক্তিত্বরাও তালিকায় রয়েছেন—অভিনেত্রী জুহি চাওলা, হৃতিক রোশন, অমিতাভ বচ্চন এবং পরিচালক করণ জোহর।
শাহরুখ খান তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে রাজত্ব করছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেন রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট এবং নাইট রাইডারস আইপিএল ক্রিকেট দল। হুরুন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আনাস রহমান জুনাইদ জানান, শাহরুখের বিলিয়নিয়ার হওয়ার মূল কারণ হলো তার প্রযোজনা সংস্থা এবং আইপিএল দল।
শাহরুখ খানের আয়ের অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপন, এবং বিশ্বব্যাপী রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ। জুনাইদ আরও বলেন, “ভারতীয় অর্থনীতি এখন এমন এক ধাপে পৌঁছেছে, যেখানে উৎপাদন, আইটি বা ব্যাংকিংয়ের বাইরেও নতুন সম্পদ সৃষ্টি হচ্ছে, যেমন ক্রীড়া, বিনোদন এবং মেধাভিত্তিক ব্যবসা।”
এটি যুক্তরাষ্ট্রের মতোই একটি ধারা, যেখানে একসময় শিল্পপতি ও ব্যাংকারদের দ্বারা প্রভাবিত ধনীদের তালিকায় এখন স্থান পাচ্ছেন ক্রীড়া দলের মালিক, মিডিয়া মোগল এবং সেলিব্রিটি-নেতৃত্বাধীন ব্র্যান্ডের মালিকরা—যেমন মাইকেল জর্ডান, লেব্রন জেমস, ওপরা উইনফ্রে ও বিয়ন্সে।
ফোর্বসের তথ্যমতে, বিশ্বের অনেক সেলিব্রিটি ধনী হলেও বিলিয়নিয়ার পর্যায়ে পৌঁছানো এখনও বিরল, মাত্র দুই ডজনের মতো মানুষ এই কীর্তি অর্জন করেছেন।
এই বছর হুরুন ইন্ডিয়া তালিকায় আরও চারজন বলিউড তারকা ও তাদের পরিবার স্থান পেয়েছেন। শাহরুখ খানের সম্পদ তাদের তুলনায় বৃহত্তর। তার সহ-অভিনেত্রী জুহি চাওলা ও পরিবারের সম্পদ প্রায় ৮৮০ মিলিয়ন ডলার, হৃতিক রোশন ২৬০ মিলিয়ন ডলার, করণ জোহর ২০০ মিলিয়ন ডলার, এবং অমিতাভ বচ্চন ও পরিবারের সম্পদ ১৮৩ মিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালে করণ জোহর আলোচনায় আসেন, যখন তিনি ধর্মা প্রোডাকশন্সের ৫০% শেয়ার ভারতের শীর্ষ ভ্যাকসিন উদ্যোক্তা আদার পুনাওয়ালার কাছে ১১৯ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন।
হুরুন ইন্ডিয়ার তথ্যমতে, ২০২৫ সালে ভারতের বিলিয়নিয়ার সংখ্যা ৩৫০ অতিক্রম করেছে, যেখানে মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানি শীর্ষ দুটি স্থানে রয়েছেন। শাহরুখ খানের এই কীর্তি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সম্পদের প্রতিফলন নয়, এটি ভারতীয় বিনোদন ও ক্রীড়া শিল্পের বিকাশ এবং নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রমাণ।
শাহরুখ খানের সাফল্য প্রমাণ করে যে সৃজনশীলতা, পরিশ্রম এবং ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা মিশিয়ে একজন শিল্পী কেবল বিনোদনের মাধ্যমে নয়, বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তার করে মানবিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন।