গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেন। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ভারতের নরেন্দ্র মোদির প্রকাশ্য সমর্থন হাসিনার প্রতি দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ফলে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব প্রসারিত হয়েছে এবং ভারতীয় পণ্য বয়কেটের মুখোমুখি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় শাড়ির বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে বারানসির বেনারসি শাড়ির ব্যবসায় ধাক্কা লেগেছে। শাড়ির সূক্ষ্ম কারুকাজ, ঝলমলে জরি ও সোনার-রুপার তারের কাজের কারণে এক শাড়ি তৈরি করতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, এবং এর দাম এক লাখ রুপি বা তারও বেশি হতে পারে। কিন্তু বয়কেটের কারণে বেনারসি শাড়ির বিক্রি অর্ধেকেরও কমে গেছে। অনেক তাঁতি পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন, যাদের সংখ্যা একসময়ে চার লাখ ছিল, এখন তা নেমে এসেছে দুই লাখে।
বাংলাদেশের বয়কেটের ফলে পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় তাঁতি ও শাড়ি ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়েছেন। শান্তিপুরসহ নদীয়া জেলার সুতি শাড়ি ব্যবসায়ীরা বাজারে নতুন করে জায়গা করে নিচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার দুর্গাপূজার সময়ে বিক্রি গত বছরের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। তরুণ নারীরা আধুনিক পোশাকের দিকে ঝুঁকলেও, বাংলাদেশি শাড়ি বাজারে থাকা অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের সুতি শাড়ির বিক্রি বেড়ে গেছে।
বেনারসি শিল্পের জন্য রাজনৈতিক অস্থিরতা, নোটবন্দী, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং করোনাভাইরাস মহামারি ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশি বয়কেটের কারণে এই সংকট আরও গভীর হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এখন ভারতের সরকারের কাছে সমাধান চান যাতে শাড়ি ব্যবসা পুনরায় সচল করা যায়। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের তাঁতি ও ব্যবসায়ীরা নতুন সুযোগ পেয়ে আনন্দিত, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের বিক্রি বাড়ছে।
সূত্র: আল জাজিরা