ফিলিস্তিনের গাজার দিকে যাত্রা চালানো ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের একমাত্র জাহাজ দ্য ম্যারিনেট এখনও অবরোধ অগ্রাহ্য করে চলেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, বহরের অন্যান্য সব জাহাজকে ইতিমধ্যেই ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করেছে, তবে একমাত্র ম্যারিনেটকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ম্যারিনেট জাহাজটি পোল্যান্ডের পতাকাবাহী, এবং এতে মোট ছয়জন আরোহী রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন তুরস্কের মানবাধিকারকর্মী সিনান আকিলতু। তিনি আজ জাহাজ থেকে একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, “আমরা এখন উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় প্রবেশ করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা দুটি মহৎ পরিণতির যেকোনো একটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি।”
জাহাজের বর্তমান অবস্থান
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৪টার দিকে ম্যারিনেট ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল। এ সময় জাহাজের গতি ঘণ্টায় প্রায় ৩.৭৮ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৭ কিলোমিটার)। গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (৮০ কিলোমিটার)।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, জাহাজের ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, ইঞ্জিনে সমস্যা ছিল যা ইতিমধ্যেই ঠিক করা হয়েছে। জাহাজটি অটলভাবে গাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই ম্যারিনেটকে সতর্ক করেছে। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ বা অবরোধ ভাঙার যেকোনো চেষ্টা প্রতিরোধ করা হবে। তাছাড়া, বহরের অন্যান্য ৪২টি জাহাজকে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আরোহীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবুও, ফ্লোটিলা আয়োজকরা বলেছেন, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, এটি ভয়, অবরোধ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার প্রতীক। জাহাজটি স্টারলিংকের মাধ্যমে এখনো বহরের সঙ্গে সংযুক্ত।
মানবিক ও প্রতীকী তাৎপর্য
গাজার প্রতি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার এ প্রচেষ্টা কেবল নৌবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত নয়, বরং মানবাধিকার, স্বাধীন নৌপরিবহন ও আন্তর্জাতিক আইন রক্ষার প্রতীক। ফ্লোটিলা আয়োজকরা বারবার জানিয়েছে যে, তারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে চাই।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ম্যারিনেটের অগ্রযাত্রা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর গুরুত্ব ও রোহিঙ্গা-সহ অন্যান্য সংকটাপন্ন এলাকায় অবরোধ মোকাবেলার তাগিদ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।