বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের অঙ্গীকার অনেক হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় সবসময়। এমন সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যখন “রঙধনু সমাজ” গঠনের ঘোষণা দেন, তখন তা মানুষের হৃদয়ে নতুন আলো জ্বালিয়েছে। বৈষম্যহীন, ভেদাভেদহীন একটি সমাজ—যেখানে প্রত্যেকে সমান মর্যাদায় বাঁচবে।
নোয়াখালী-৫ আসনের বিএনপি নেতা ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম মনে করেন, জনগণ এখন এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। তিনি বলেন,
“মানুষ মুখিয়ে আছে তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে। কারণ তিনি মানুষের জন্য নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন।”
রঙধনু সমাজ: একটি দৃষ্টিভঙ্গি
তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যে “রঙধনু সমাজ” বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটি মূলত একটি মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি।
যেখানে থাকবে—
-
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার
-
নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা
-
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ
-
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় সবার সমান প্রবেশাধিকার
-
দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন
ফখরুল ইসলাম বলেন,
“রঙধনু সমাজ মানে এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো মানুষকে তার ধর্ম বা আর্থিক অবস্থার কারণে পিছিয়ে থাকতে হবে না। সবাই এগিয়ে যাবে একসাথে।”
দুর্গাপূজা ও সম্প্রীতির বার্তা
২ অক্টোবর রাতে কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে ফখরুল ইসলাম সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রতিটি মণ্ডপে ভক্তদের খোঁজখবর নেন, শিশু-কিশোরদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের আশ্বস্ত করেন।
তিনি বলেন—
“বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের। এখানে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই শান্তিতে থাকবে। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়া আমাদের জন্য বড় সাফল্য।”
তিনি আরও জানান, এবারের পূজার নিরাপত্তা রক্ষায় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল একসাথে কাজ করেছে।
“কোথাও কোনো অঘটন ঘটেনি। এজন্য প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রশংসার দাবিদার।”
মানবিক সহায়তা ও প্রতিশ্রুতি
ফখরুল ইসলাম শুধু রাজনীতির কথা বলেননি, তিনি বাস্তবে সহায়তাও করেছেন।
-
৩২টি পূজামণ্ডপে নগদ অর্থ প্রদান
-
শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ
-
কবিরহাট উপজেলায় একটি মডেল মন্দির নির্মাণের ঘোষণা
তার ভাষায়—
“আমরা চাই, হিন্দু সম্প্রদায় যেন আরও মর্যাদা নিয়ে উৎসব পালন করতে পারে। তাদের দাবি অনুযায়ী আমরা মডেল মন্দির নির্মাণ করব।”
স্থানীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা তাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, এরকম উদ্যোগ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও মজবুত করবে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আফতাব আহমেদ বাচ্চু, আনিছুল হক, একরামুল হক মিলন, বসুরহাট পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল বাশার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মহিনউদ্দিন ছোটন, আবদুল কাদের জসিম ও ছাত্রদল নেতা জহিরুল ইসলাম হৃদয় প্রমুখ।
জনগণের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের এক প্রবীণ সদস্য বলেন—
“আমরা সবসময় চাই শান্তিতে উৎসব পালন করতে। বিএনপি নেতারা পাশে দাঁড়ানোয় আমরা স্বস্তি পেয়েছি।”
এক তরুণ ভোটার বলেন—
“আমরা পরিবর্তন চাই। এমন একজন নেতা চাই যিনি সবার জন্য কাজ করবেন। যদি তারেক রহমান সত্যিই রঙধনু সমাজ গড়ে তোলেন, তবে এটাই হবে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। ফখরুল ইসলামের মাঠপর্যায়ের সক্রিয়তা এবং মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় ভোটারদের কাছে তাকে জনপ্রিয় করে তুলছে। বিশেষ করে পূজার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ানো তার প্রতি আস্থা বাড়িয়েছে।
উপসংহার
বাংলাদেশ এখন এমন এক সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে, যখন মানুষ পরিবর্তন চায়। বৈষম্যহীন সমাজ, মানবিক রাষ্ট্র, সবার জন্য সমান সুযোগ—এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলে তা পুরো জাতির জন্য হবে এক নতুন ভোর।
ফখরুল ইসলাম যে বার্তা দিয়েছেন, তা শুধু নোয়াখালী নয়, সমগ্র বাংলাদেশেই আশা জাগিয়েছে।
“মানুষ মুখিয়ে আছে তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে। সেই দিন আসবেই।”—এমন দৃঢ় প্রত্যয়ে শেষ করেন তিনি।