• হোম > বিদেশ > জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: রিজওয়ানা হাসান

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা জরুরি: রিজওয়ানা হাসান

  • বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৯
  • ৪০

---

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করছে। এই প্রেক্ষাপটে উন্নত বিশ্বকে দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় শুধু কিছু ক্ষুদ্র প্রকল্প নয়, বরং রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য উন্নত দেশগুলোকে বাড়তি অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ‘রেজিলিয়েন্স ফর অল: ক্যাটালইজিং ট্রান্সফরমেশনাল অ্যাডাপ্টেশন’ শীর্ষক ৯ম এশিয়া-প্যাসিফিক ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপ্টেশন ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, “কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদী অভিযোজন নিশ্চিত করতে খণ্ডকালীন ও সীমিত প্রকল্প থেকে সরে এসে কৃষি, পানি, জীববৈচিত্র্য ও উপকূলীয় ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত ও পদ্ধতিগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।” তিনি উল্লেখ করেন, প্রকৃতি নির্ভর সমাধান, জলবায়ুবান্ধব প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান— ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় ৭৮ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক, যার অর্ধেক নারী, দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দেশে স্থাপন করা হয়েছে ৪ হাজার ২৯১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে বিশেষ উদ্ধার নৌযান এবং উপকূলীয় অঞ্চলে কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ খরা, লবণাক্ততা ও জলমগ্ন সহনশীল ধান প্রজাতি উদ্ভাবন করেছে। বরেন্দ্র অঞ্চল ও হাওরাঞ্চলে প্রকৃতি নির্ভর অভিযোজন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের সহ-ব্যবস্থাপনা জীববৈচিত্র্য রক্ষা করছে এবং স্থানীয় জনগণের স্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে।”

বাংলাদেশের অভিযোজন সাফল্যের মূল চালিকা শক্তি হলো নীতি ও শাসনব্যবস্থা, জনগণভিত্তিক নেতৃত্ব এবং উদ্ভাবনী অর্থায়ন। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আইনগত ভিত্তি দিয়েছে, আর তৃণমূল পর্যায়ের উদ্ভাবন ও স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্ক মানুষকেন্দ্রিক অভিযোজনকে আরও শক্তিশালী করেছে।

এই গোলটেবিল বৈঠকে জাপান, যুক্তরাজ্য, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও বক্তব্য রাখেন। তারা সবাই একমত হন যে, জলবায়ু পরিবর্তন শুধু একটি পরিবেশগত সংকট নয়— এটি একটি মানবিক সংকটও। তাই উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশ যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তা বিশ্বকে একটি শিক্ষা দিয়েছে— অভিযোজন সম্ভব, যদি সঠিক নীতি, সমন্বয় এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায়।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5174 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 07:49:37 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh