জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির কিছুদিন পরই ব্রিটিশ লেবার পার্টির সম্মেলনে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ সরকারের ওপর ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধের চাপ আরও বাড়িয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, লিভারপুলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি ভোটের মাধ্যমে এই প্রস্তাবকে অনুমোদন দিয়েছেন। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, গাজায় গণহত্যা বন্ধে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।
অস্ত্র ও মানবিক ত্রাণ
প্রস্তাবে ইসরায়েলের কাছে সব ধরনের অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ এবং গাজায় বাধাহীন মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এই নীতিগত স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাব
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের পরিচালক বেন জামাল বলেন,
“এটি লেবার পার্টির সরকারের জন্য চরম সংকেত। সরকার যদি এই দাবি উপেক্ষা করে, তবে তারা ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করছে এবং জনগণের দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই অবস্থায় তারা ক্রমেই আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”
বেন জামাল আরও বলেন, ইসরায়েলের ওপর সর্বাত্মক অবরোধ ও অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মানবিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সম্মেলনের দৃশ্যপট
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্মেলনের আগে লেবার পার্টি সমর্থকদের মধ্যে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ হয়। গত সোমবার অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভের বক্তব্য চলাকালীন একজন ব্যক্তি ফিলিস্তিনের বিশাল পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্যাম পি নামের ওই ব্যক্তি বলেন,
“যুক্তরাজ্য কেন এখনো ইসরায়েলকে অস্ত্র দিচ্ছে? ফিলিস্তিনে খাদ্যের চরম অভাবের জন্য দায়ী লেবার পার্টি।”
ডেপুটি পলিটিক্যাল এডিটর ড্যানিয়েল মার্টিন মন্তব্য করেছেন,
“নিজ দলের সম্মেলনে অপমানিত হলেন স্যার কিয়ার স্টারমার।”
হিউম্যানিটারিয়ান প্রেক্ষাপট
গাজার নাগরিকরা চলমান সংঘর্ষ ও অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকটে আছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই গণহত্যার স্বীকৃতি মানবিক ত্রাণ এবং আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্রিটিশ সরকার যদি লেবার পার্টির সিদ্ধান্তকে নীতিতে রূপান্তর না দেয়, তবে তা মানবিক সাহায্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হবে।