• হোম > বাংলাদেশ > ব্যাংকের অর্থ লুটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চলছে: ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী

ব্যাংকের অর্থ লুটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চলছে: ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী

  • রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:২৮
  • ২৮

---

অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, গত ১৬ বছরে ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং কেউই ছাড় পাবে না। রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে ইতোমধ্যেই লুটপাটে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারাকাতকে অন্য মামলায় আটক হওয়া উল্লেখ করে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, অচিরেই তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে মামলা করা হবে; বারাকাতের আমলে জনতা ব্যাংক থেকে যে লোনগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলোর প্রতিটি টাকার হিসাব নেবে সরকার।

তিনি আরও বলেন, শুধু জনতা ব্যাংক নয়—অন্যান্য সব ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতিও সরকারের নজরে আছে এবং সময়মতো জনগণকে সব কিছু জানানো হবে। আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে জোরালো মামলাগুলোতে যথেষ্ট ডকুমেন্টেশন প্রয়োজন, তাই হুট করে করা যাচ্ছে না; তবু টাকা পাচার বা লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যাচাই করা তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মামলা করা হবে। টাকা পাচার রোধে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স চুক্তি করছে এবং ভবিষ্যতে এমন আইন করা হবে যাতে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করতে গেলে দশবার ভাবতে হয়—কারণ কেউই রেহাই পাবে না।

অর্থ বিষয়ক সংশোধন অভিযানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নারের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিও কাজ করছে বলে তিনি জানান। গত ১৬ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে; তবে প্রত্যেক দেশের বিশেষ আইন-কানুন ভিন্ন হওয়ায় আলাদা চুক্তি করতে হচ্ছে, তাই কিছুটা সময় লাগছে। তিনি উদাহরণস্বরূপ সুইজারল্যান্ড, আবুধাবি, কাতার, দুবাই, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, কানাডা ও যুক্তরাজ্য উল্লেখ করে বলেন, কিছু দেশে পাচারকারীদের নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যা ফেরত আনা কঠিন করে তুলছে।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় অগ্রগতির প্রসঙ্গে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, বিপ্লবের পর ক্ষমতার পরিবর্তনের মতো পরিস্থিতিতে সাধারণত জিডিপি পড়ে, বেকারত্ব বাড়ে ও মূল্যস্ফীতি দেখা যায়—তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা ঘটেনি; আমাদের জিডিপি নেগেটিভ হয়নি এবং আমরা তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় আছি। তিনি বলেন, এনবিআর সংস্কারই ছিল যুগান্তকারী—বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে নীতি নির্ধারণ ও রাজস্ব আদায়ের কাজ আলাদা সংস্থার মাধ্যমে করা হয়; তাই এনবিআর-এর পৃথকীকরণ প্রয়োজন ছিল।

দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে শুধু আইন করলেই পর্যাপ্ত হবে না—পদে পোস্টিংয়ের কষ্টসাধ্য নিয়ন্ত্রণ, নৈতিকতা ও ধর্মীয় বিষয়গুলোর ওপরও মনোযোগ দিতে হবে, এমনটাই বললেন তিনি। আর্থিক খাতের সংস্কার চলমান রয়েছে এবং একটু সময় লাগলেও এটি অচিরেই দৃশ্যমান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও জানান, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যে শঙ্কা আছে তা তেমন প্রভাব ফেলবে না কারণ দেশের উৎপাদিত অধিকাংশ (প্রায় ৮৫%) ওষুধ জেনেরিক; কিছু ক্ষেত্রে লাইসেন্স ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে দেশের অংশগ্রহণ বাড়ছে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5086 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 06:46:55 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh