• হোম > ফিচার > নতুন গবেষণা: জনপ্রিয় চা ব্যাগে লুকিয়ে থাকতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি

নতুন গবেষণা: জনপ্রিয় চা ব্যাগে লুকিয়ে থাকতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৪০
  • ৪৭

---

বাংলাদেশে সকালবেলার ঘুম ভাঙানো থেকে শুরু করে দিনের ক্লান্তি দূর করতে চায়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ঝামেলাহীন ও সাশ্রয়ী হওয়ায় একবার ব্যবহারযোগ্য চা ব্যাগ (টি-ব্যাগ) বহু চা-প্রেমীর কাছে প্রথম পছন্দ। কিন্তু সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানী গবেষণায় উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য—প্রতিদিনের সেই প্রিয় চায়ের কাপেই লুকিয়ে আছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।

পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (ইএসডিও) স্থানীয় বাজার থেকে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ১৩টি নমুনা (১২টি টি-ব্যাগ ও একটি আলগা পাতা) সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা চালায়। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এসব চায়ে আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত নিরাপদ সীমার তুলনায় বহুগুণ বেশি বিষাক্ত ভারী ধাতুর উপস্থিতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রোমিয়ামের মাত্রা ধরা পড়েছে ১,৬৯০ পিপিএম যেখানে নিরাপদ সীমা মাত্র ৫ পিপিএম। একইভাবে সিসার মাত্রা ৫১ পিপিএম (সীমা ৫ পিপিএম), পারদ ১০৮ পিপিএম (সীমা ০.৩ পিপিএম) এবং আর্সেনিক ১৪ পিপিএম (সীমা ২ পিপিএম)। শুধু তাই নয়, টি-ব্যাগের প্যাকেজিংয়েও অ্যান্টিমনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে ১৫৪ পিপিএম পর্যন্ত। এমনকি ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের মতো তেজস্ক্রিয় ধাতুর চিহ্নও শনাক্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের উচ্চমাত্রার বিষাক্ত উপাদান নিয়মিত চা পানকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ৫৫ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে তিন কাপ এবং ২৭ শতাংশ চার বা ততোধিক কাপ চা পান করেন, অথচ মাত্র ১ শতাংশ ভোক্তা জানেন যে টি-ব্যাগে ভারী ধাতু থাকতে পারে। যদিও পরীক্ষায় আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, জিঙ্ক ও কোবাল্টের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানও শনাক্ত হয়েছে, তবে ক্ষতিকর ধাতুর উচ্চমাত্রা সেই সুফলকে ম্লান করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে ইএসডিও’র চেয়ারম্যান মারগুব মোর্শেদ বলেন, “এটি ভোক্তা অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। আমরা কর্তৃপক্ষ, উৎপাদক এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।”

গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, স্বাভাবিক অভ্যাস হিসেবে জনপ্রিয় চা পান আসলে মানুষকে অজান্তেই ঝুঁকিতে ফেলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা, উৎপাদকদের দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। তাহলেই সাধারণ মানুষ নিরাপদ চা পান নিশ্চিত করতে পারবে এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকবে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5068 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 01:14:25 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh