• হোম > > জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

  • শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:৩৭
  • ৮৩

---

সম্মানিত সভাপতি, মহামান্য রাষ্ট্রপ্রধানবৃন্দ, মাননীয় প্রতিনিধি এবং অতিথিবৃন্দ,

আজ এই মহৎ আসরে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বাংলাদেশ আজ এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। জনগণের আন্দোলন ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই—অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও টেকসই গণতন্ত্র গড়ে তোলা।


বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমরা জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছি। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই—এই নির্বাচন হবে কেবল একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়; এটি হবে একটি ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন। এই নির্বাচনই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।

আমাদের জনগণ গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করছি—এই নির্বাচনে প্রত্যেক নাগরিক তার ভোটাধিকার অবাধে প্রয়োগ করতে পারবে।


অর্থনীতি ও উন্নয়ন

মাননীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,
বাংলাদেশের অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে।

আমি এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই—ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার মডেল। এগুলো বাংলাদেশের মতো দেশে টেকসই উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

আমাদের উন্নয়ন হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক—যেখানে নারী, প্রান্তিক ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী সমান সুযোগ পাবে।


জলবায়ু পরিবর্তন

প্রিয় সহকর্মীরা,
জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত আমরা নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও লবণাক্ততার মতো দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছি।

আমরা উন্নত বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—জলবায়ু তহবিল প্রদানের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে টিকে থাকার জন্য এটি জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা কোনো এক দেশের দায়িত্ব নয়; এটি আমাদের সকলের যৌথ দায়িত্ব।


মানবাধিকার ও শান্তি

মাননীয় সভাপতি,
বাংলাদেশ মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কোনো রাষ্ট্রই মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। আমরা চাই একটি বিশ্ব, যেখানে প্রতিটি মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বাঁচবে, যেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবার কণ্ঠস্বর এক হবে।


বৈশ্বিক সহযোগিতা

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো—জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সংঘাত—কোনো একক দেশ সমাধান করতে পারবে না। তাই প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পারস্পরিক আস্থা এবং মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা।


উপসংহার

শেষে আমি বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই—
আসুন, আমরা একসাথে কাজ করি।
আসুন, আমরা শান্তি, ন্যায়বিচার ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাই।
বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করে—জনগণের শক্তিই প্রকৃত পরিবর্তনের চালিকা শক্তি।

আজ আমরা সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি নতুন যাত্রা শুরু করেছি।
এই যাত্রায় আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা, সমর্থন এবং আশীর্বাদ কামনা করছি।

ধন্যবাদ।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/5028 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 04:37:35 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh