মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনোভাবেই ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর দখল বা সংযুক্ত করার অনুমতি দেবেন না। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের ঠিক আগে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন—
“আমি ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর দখল করতে দেব না… যথেষ্ট হয়েছে। এখন থামার সময় এসেছে।”
খবরটি প্রকাশ করেছে বিবিসি ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
প্রেক্ষাপট
আসছে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে তিনি জানান, গাজা নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং একটি সমঝোতা “প্রায় কাছাকাছি” চলে এসেছে।
ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে একীভূত করার দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের মতে, এটি করলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা বন্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু এই সংযুক্তির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ সরব হয়েছে।
-
যুক্তরাজ্য ও জার্মানি ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে।
-
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এই পদক্ষেপ “নৈতিক, আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে অসহনীয়।”
বিশ্বচাপ ও ফিলিস্তিনি প্রশ্ন
সম্প্রতি পশ্চিমা কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একইসঙ্গে গাজা যুদ্ধ ও পশ্চিম তীর দখল নিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে। বিশ্ব জনমত ক্রমেই শান্তির দাবি তুলছে।
নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটে থাকা অতি-জাতীয়তাবাদীরা তবে সংযুক্তির দাবি থেকে সরে আসেনি। তাদের রাজনৈতিক টিকে থাকার অন্যতম ভিত্তিই হলো এজেন্ডা।
ট্রাম্পের অবস্থান ও মানবিক দিক
ট্রাম্প যদিও অতীতে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তবে এবার তিনি স্পষ্ট করে দিলেন— পশ্চিম তীর দখল আর এগোবে না। তিনি ইঙ্গিত দিলেন, গাজা ইস্যুতেও আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান আসতে পারে।
মানবিকভাবে এই ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ—
-
দখল মানে আরও বাস্তুচ্যুত পরিবার, ভাঙা ঘরবাড়ি ও অমানবিক কষ্ট।
-
শান্তির পথে অগ্রগতি মানে হাজারো শিশু, নারী ও বৃদ্ধের জীবন বাঁচা।
-
পশ্চিম তীর ও গাজার মানুষ বহু দশক ধরে যুদ্ধের ভেতর বেঁচে আছে; তাদের জন্য একটি ন্যায্য সমাধান এখন সময়ের দাবি।
উপসংহার
ডোনাল্ড ট্রাম্পের “না” কেবল একটি রাজনৈতিক বার্তা নয়, এটি দীর্ঘদিনের সংঘাতের মাঝে আটকে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য এক আশার আলোও বয়ে আনতে পারে। তবে বাস্তবে এই শান্তি কতটা প্রতিষ্ঠিত হবে, তা নির্ভর করছে কেবল নেতানিয়াহু নয়, বরং পুরো আন্তর্জাতিক সমাজের দৃঢ়তার ওপর।
বিশ্ব এখন দেখছে— সত্যিই কি গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষরা যুদ্ধের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে শান্তির ভোর দেখবে?