• হোম > অর্থনীতি | টেকনোলজি | প্রধান সংবাদ > সার সিন্ডিকেট ভাঙার পথে সরকার: কৃষকের স্বস্তি আসবে কি?

সার সিন্ডিকেট ভাঙার পথে সরকার: কৃষকের স্বস্তি আসবে কি?

  • শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:০১
  • ৪৯

পুরোনো ব্যবস্থার জটিলতা দূর করে নতুন উদ্যোগে একীভূত ও স্বচ্ছ সার বিতরণ – কৃষকের জন্য সাশ্রয়ী ও ঝামেলামুক্ত সমাধান।

বছরের পর বছর কৃত্রিম সংকট ও রাজনৈতিক ডিলারদের প্রভাবের পর এবার একীভূত নীতিমালায় স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ—মাঠে কতটা সফল হবে সরকার?

পুরোনো সংকটের চিত্র
বাংলাদেশে সার বিতরণকে কেন্দ্র করে কৃত্রিম সংকট নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে আমন মৌসুমে পতিত সরকারের নিয়োগ পাওয়া ডিলারদের সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে বছরের পর বছর।
একাধিক পরিবার সদস্যের নামে লাইসেন্স নেওয়া, ইউনিয়নে না থেকেও ডিলারশিপ চালানো, এমনকি পালিয়ে যাওয়া ডিলারের নামেও বরাদ্দ চলতে থাকা—এসব অনিয়ম ছিল প্রকাশ্য গোপন।
কৃষকদের অভিযোগ—সরকারি দরে সার না পেয়ে তারা খুচরা দোকান থেকে বাড়তি দামে কিনতে বাধ্য হন। বিভিন্ন জেলায় মজুত, চুরি ও অতিরিক্ত দামে বিক্রির ঘটনাও ধরা পড়ে নিয়মিত। তার ওপর বিএডিসি ও বিসিআইসির আলাদা নিয়ন্ত্রণ কৃষকদের দ্বিগুণ হয়রানির শিকার করেছে।

সরকারের নতুন সংস্কার: সিন্ডিকেট ভাঙতে সাহসী পদক্ষেপ
বাংলাদেশের কৃষি খাতে সার শুধু একটি উৎপাদন উপকরণ নয়, এটি খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে বিতরণ ব্যবস্থার ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃষকদের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার সার নীতিতে যে পরিবর্তন আনছে, তা অনেকের কাছে যুগান্তকারী সংস্কার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

একীভূত বিতরণ ব্যবস্থা
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো—বিএডিসি ও বিসিআইসি আলাদা ডিলারশিপ আর থাকবে না। এতদিন কৃষককে কখনো বিসিআইসির ডিলারের কাছে, আবার কখনো বিএডিসির ডিলারের কাছে যেতে হতো। এতে শুধু দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়নি, বরং দুই প্রতিষ্ঠানের ডিলাররা একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে কৃষককে হয়রানি করত।
নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে কৃষককে আর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না, বরং এক জায়গা থেকেই সব ধরনের সার পাওয়া সম্ভব হবে।

স্বচ্ছ দরপত্র প্রক্রিয়া
এর আগে সার আমদানিতে প্রায়শই অভিযোগ উঠত—আন্তর্জাতিক বাজারদরের তুলনায় বেশি দামে টেন্ডার অনুমোদন দেওয়া হতো। সিন্ডিকেটভুক্ত কিছু ব্যবসায়ী একসঙ্গে দরপত্রে অংশ নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়িয়ে দিত।
এবার সরকার স্পষ্ট করেছে—স্বচ্ছ দরপত্র প্রক্রিয়া ছাড়া কোনো কার্যাদেশ দেওয়া হবে না।

আন্তর্জাতিক বাজারদর যাচাই
কার্যাদেশ দেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান যেমন Argus ও Ferticon থেকে বাজারদরের তথ্য যাচাই করা হবে। এর ফলে কাগজে-কলমে কোটেশন নয়, বরং বাস্তব আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে—একবার দর যাচাই হয়ে গেলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকেই কার্যাদেশ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে অতীতে প্রচলিত “চেনাজানা ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়ার সংস্কৃতি” ভাঙার চেষ্টা চলছে।

ডিলারের সংখ্যা বৃদ্ধি
গ্রামীণ কৃষক যাতে সহজে সার পেতে পারেন, এজন্য ডিলারের সংখ্যা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে স্থানীয়ভাবে যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের ডিলারশিপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে একদিকে কৃষক ন্যায্য দামে সার পাবেন, অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়ে কালোবাজারির সুযোগ কমবে।

অনিয়মকারীদের লাইসেন্স বাতিল
নীতিমালায় স্পষ্ট বলা হয়েছে—যে ডিলার মজুত, চুরি, বেশি দামে বিক্রি বা কৃষককে হয়রানির সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তার ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।
আগে অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী ডিলাররা শাস্তির বাইরে থাকত, এবার সেই সুযোগ আর থাকবে না।

সরকারের সাশ্রয় ও স্বস্তি
এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, টিএসপি সার আমদানিতে এবার আগের তুলনায় কয়েক কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। শুধু টিএসপি নয়, ডিএপি ও এমওপি সারেও একইভাবে ব্যয়ের চাপ কমেছে।
অন্যদিকে দীর্ঘদিনের আরেক আলোচিত ইস্যু ছিল পরিবহন ঠিকাদারদের সিন্ডিকেট।
দেশের বিভিন্ন বন্দর থেকে সার গুদাম বা ডিলারের কাছে পৌঁছাতে পরিবহন খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় হতো। অভিযোগ ছিল—এক শ্রেণির পরিবহন ঠিকাদার গোপনে যোগসাজশ করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করত, যার ফলে কোটি কোটি টাকা লুট হয়ে যেত।
এবার সেই সিন্ডিকেট ভেঙে পরিবহন খরচও নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

কৃষকের প্রত্যাশা
সংস্কারের ফলে সরকারের অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন কৃষকরাই।
যদি মাঠপর্যায়ে সঠিকভাবে এই নীতিমালা প্রয়োগ হয়, তবে কৃষকরা আর বাড়তি দামে সার কিনতে বাধ্য হবেন না। মৌসুমে সার ঘাটতি বা কৃত্রিম সংকট তৈরি হওয়ার সুযোগও অনেক কমে আসবে।

সামনে কী অপেক্ষা করছে: আশার আলো ও অদৃশ্য বাধা
অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক সংস্কার কার্যক্রম কৃষকদের মধ্যে নতুন আশার জন্ম দিয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবতা অনেক সময় ভিন্ন চিত্র দেখায়।
শুধু নীতিগত ঘোষণা নয়—কার্যকর প্রয়োগ এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই কাঠামোই আসল পরীক্ষার জায়গা।

প্রশাসনিক দুর্বলতা
বাংলাদেশের কৃষি প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করছে।
মাঠ পর্যায়ের কৃষি অফিসগুলোতে জনবল সংকট, পর্যাপ্ত মনিটরিংয়ের অভাব এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা সংস্কারের বাস্তবায়নকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।
অনেক সময় কর্মকর্তাদের গাফিলতি বা অনাগ্রহ কৃষকদের ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত করে।

স্থানীয় প্রভাবশালী ডিলারদের চাপ
ডিলারশিপ সবসময়ই স্থানীয় রাজনীতি ও প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে থেকেছে।
নতুন নীতিমালায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার চেষ্টা হলেও, প্রভাবশালীরা যদি রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে ডিলারশিপ ধরে রাখে, তবে পুরোনো সমস্যা থেকেই যাবে।
কৃষকের সার পাওয়ার নিশ্চয়তা তখনও ব্যাহত হতে পারে।

পুরোনো সিন্ডিকেট ভাঙার কঠিনতা
দশকের পর দশক ধরে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট একদিনে ভাঙা সহজ নয়।
তারা শুধু ডিলারশিপেই নয়, পরিবহন, গুদাম, এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও যোগসাজশ করে রেখেছে।
এ ধরনের গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নানা কৌশল নিতে পারে—যেমন কৃত্রিম সংকট তৈরি, রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি, কিংবা আইনি জটিলতা দাঁড় করানো।

রাজনৈতিক সদিচ্ছার গুরুত্ব
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা।অতীতে বহুবার নীতিমালা কাগজে থাকলেও রাজনৈতিক চাপের কারণে তা কার্যকর হয়নি।এবার যদি সরকার সত্যিই দীর্ঘমেয়াদে কৃষককেন্দ্রিক নীতি ধরে রাখতে চায়, তবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয় বা প্রভাবশালী অবস্থান যেন প্রভাব না ফেলে, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

কৃষকের আস্থা পুনর্গঠন
কৃষক দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি ও অনিয়মের শিকার হয়েছেন। ফলে সরকারের প্রতি তাদের আস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত।নতুন উদ্যোগ মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান ফল দিতে পারলে তবেই কৃষকের আস্থা ফিরবে।না হলে তারা আবারও কালোবাজার ও খুচরা দামের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হবেন।

ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা: টেকসই সংস্কারের রূপরেখা
সারের বাজারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা এবং কৃষকদের ভোগান্তি দূর করতে সরকার যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, সেটিকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে হলে শুধু নীতিমালার ঘোষণাই যথেষ্ট নয়।এর কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি, সক্রিয় তদারকি, জনসম্পৃক্ততা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য-সহনশীল নীতি।

ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু
সার বিতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা জরুরি।প্রতিটি ডিলারের কাছে কতটুকু সার যাচ্ছে, কৃষকের হাতে কতটুকু পৌঁছাচ্ছে—এসব তথ্য রিয়েল-টাইমে মনিটর করা গেলে অনিয়মের সুযোগ কমে যাবে।
মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে কৃষকরাও তাদের প্রাপ্য সার এবং সরকারি দরের তথ্য জেনে নিতে পারবেন। এতে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং কালোবাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।

ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত সার বিতরণ তদারকি
বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই সার বিতরণে যথাযথ তদারকি হয় না। ফলে কৃষক লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও প্রাপ্য সার পান না।ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি অফিসার এবং জন প্রতিনিধি সমন্বিতভাবে নিয়মিত সার বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করলে কৃষক হয়রানি কমবে।
এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে “সার বিতরণ রেজিস্টার” চালু করে জনসম্মুখে তা প্রকাশ করা যেতে পারে।

কৃষক সংগঠন ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা
কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তারাই নিজেরা।ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে কৃষক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সার বিতরণ তদারকিতে যুক্ত করা হলে অনিয়ম সহজেই ধরা পড়বে। পাশাপাশি স্থানীয় গণমাধ্যম যদি নিয়মিতভাবে সার বাজার ও বিতরণ ব্যবস্থার খবর প্রচার করে, তবে জবাবদিহি বাড়বে এবং সিন্ডিকেটের প্রভাব কমবে।

দুর্নীতির অভিযোগে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতকরণ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শাস্তির নিশ্চয়তা।অতীতে দেখা গেছে—অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও অধিকাংশ সময় প্রভাবশালী ডিলাররা পার পেয়ে যেত।এবার যদি সত্যিই পরিবর্তন আনতে হয়, তবে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুত লাইসেন্স বাতিল ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।এ ক্ষেত্রে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে অন্যরা অনিয়ম করতে নিরুৎসাহিত হবে।

এগ্রিটেক: সংস্কারের ডিজিটাল হাতিয়ার
সারের বাজারে সরকারের নতুন নীতিগত সংস্কারকে মাঠপর্যায়ে কার্যকর করতে হলে প্রযুক্তি নির্ভর সমাধানই হতে পারে সবচেয়ে বড় ভরসা।
এই জায়গাতেই এগিয়ে আসতে পারে দেশীয় এগ্রিটেক কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে greenQubeE-FARMER, e-Farmer, iFarmer এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো সারের ডিজিটাল বিতরণ ও মনিটরিং প্রক্রিয়াকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম।

ডিজিটাল মনিটরিংয়ে স্বচ্ছতা
greenQubeE-FARMER ইতিমধ্যে কৃষকদের ডিজিটাল আইডি তৈরির সক্ষমতা রাখে।এই ডাটাবেস ব্যবহার করলে নিশ্চিত করা যাবে—সরকার প্রদত্ত সার সত্যিই নিবন্ধিত কৃষকের হাতে পৌঁছাচ্ছে।
প্রতিটি ডিলারের কাছে কতটুকু সার যাচ্ছে এবং কৃষক কতটুকু পাচ্ছেন—এসব তথ্য রিয়েল-টাইমে অনলাইনে ট্র্যাক করা সম্ভব হবে।এতে কালোবাজারি ও অনিয়মের সুযোগ অনেকটাই কমে আসবে।

কৃষকের হাতে তথ্য পৌঁছানো
মোবাইল অ্যাপ বা এসএমএস নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কৃষক সহজেই জানতে পারবেন, কোন তারিখে কোথা থেকে কতটুকু সার তিনি পাবেন।এতে লাইনে দাঁড়িয়ে অনিশ্চয়তার ভোগান্তি কমবে এবং সরকারি নির্ধারিত দামে সার পাওয়ার নিশ্চয়তা মিলবে।

ফাইন্যান্সিং ও বাজার সংযোগ
e-Farmer ও iFarmer এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোকে প্রমোট করলে সরকার সহজেই কৃষকদের জন্য ডিজিটাল ঋণ ও মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা দিতে পারে।ফলে হাতে নগদ টাকা না থাকলেও কৃষক নির্দিষ্ট সময়মতো সার কিনতে পারবেন।একই সঙ্গে উৎপাদিত ফসল বিক্রি ও বাজার সংযোগও একই প্ল্যাটফর্ম থেকে সম্ভব হলে কৃষকের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।

সরকারের লাভ

  • কোটি কোটি টাকা অপচয় রোধ ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সহায়তা।
  • আমদানিকৃত সার সঠিকভাবে কৃষকের হাতে পৌঁছেছে কিনা তার ডিজিটাল প্রমাণ।
  • তথ্য-ভিত্তিক পরিকল্পনা, যা ভবিষ্যতে আমদানি ও বিতরণকে আরও কার্যকর করবে।

প্রান্তিক কৃষকের লাভ

  • সময়মতো, সহজে এবং সরকারি নির্ধারিত দামে সার প্রাপ্তি।
  • স্বচ্ছ তথ্য জানার সুযোগ, ফলে প্রতারণার ঝুঁকি কমে যাবে।
  • কৃষক সংগঠন ও স্থানীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে জবাবদিহি ও দাবি উত্থাপনে সুবিধা।

এক কথায়, সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং এগ্রিটেক কোম্পানির প্রযুক্তি যদি একসাথে কাজ করে, তবে তৈরি হবে একটি “ডিজিটাল সার ইকোসিস্টেম”।
এতে যেমন মাঠপর্যায়ের কৃষক উপকৃত হবেন, তেমনি সরকারের আর্থিক সাশ্রয় ও নীতিগত বিশ্বাসযোগ্যতাও বহুগুণে বেড়ে যাবে।
কাগজে-কলমে নীতিমালা অনেক সময় সুন্দর শোনায়, কিন্তু মাঠপর্যায়ে তার প্রয়োগই আসল চ্যালেঞ্জ।
তাই সংস্কারকে বাস্তব সফলতায় রূপ দিতে হলে প্রযুক্তি, তদারকি, জনসম্পৃক্ততা ও কঠোর শাস্তির সমন্বয় অপরিহার্য। অন্যথায়, বর্তমান উদ্যোগও পূর্ববর্তী নীতিমালার মতো শুধু কাগুজে প্রতিশ্রুতি হয়েই থেকে যাবে।

লিখেছেনঃ
Zahiduzzaman Syeed
Editor-In-Chief
Entrepreneur Bangladesh Multi Media
(www.entrepreneurbd.com)
Agritech Specialist
([email protected])


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4850 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 08:13:17 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh