• হোম > বিদেশ > যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আটকে গেল গাজায়: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব

যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আটকে গেল গাজায়: যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব

  • শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১১
  • ৩৪

---

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলো প্রায় এক স্বরেই গাজায় তৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সহায়তা পৌঁছাতে ইসরায়েলের সব বাধা তুলে নেওয়ার দাবি জানানো একটি খসড়া প্রস্তাব পাসের পথে আগিয়েছিল। সেই খসড়া প্রস্তাবটি নবান্ন (১৫ সদস্যের পরিষদে) চৌদ্দ সদস্যের সমর্থন পেলেও স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়ে বিধিবদ্ধ করতে বাধা দিল—এর ফলে প্রস্তাব কার্যকর হয়নি।

প্রস্তাবে আরও বলা ছিল—হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক থাকা সকল বন্দিকে অবিলম্বে, মর্যাদাপূর্ণ ও নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়ার দাবি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোতে কোনো বাধা থাকলে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা। খসড়াটি উপস্থাপনের আগে নিরাপত্তা পরিষদের ১০ নির্বাচিত সদস্য একজোট হয়ে এ উদ্যোগ নেন। Political and Peacebuilding Affairs

ভোটগ্রহণের মুহূর্তে ডেনমার্কের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কাস ল্যাসেন সতর্ক করে বললেন—“গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন অনুমানকৃত নয়, এটি নিশ্চিত হয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বেসামরিক মানুষের কষ্টকে আরও গভীর করেছে—এই মানবিক বিপর্যয়ই সদস্যগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপে উদ্বুদ্ধ করেছে। Reuters+1

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেয়া যুক্তি ছিল—প্রস্তাবটি হামাসকে সরাসরি দোষারোপ করে না এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার স্বীকৃতি দেয় না; এছাড়া তারা বলেছে হামাস যদি বন্দিদের মুক্তি দিত এবং অস্ত্রসমর্পণ করত তাহলে যুদ্ধ শীঘ্রই শেষ হতে পারত। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো এই সংঘাত সংক্রান্ত জাতিসংঘে তাদের ধারাবাহিক কূটনৈতিক অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। AP News+1

নতুন ভেটো পটভূমিতে গাজার মানুষের দায়িত্বরত জীবিকা, খাদ্য ও চিকিৎসাসহ মৌলিক চাহিদা নিম্নগামী—আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো পৌঁচানোতে সীমাবদ্ধতা ও নিরাপত্তাহীনতা উল্লেখ করে সতর্ক করে আসছে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত এবং কয়েকটি রুট কিংবা আবাসিক এলাকা ঘিরে থাকা ফলে সহায়তা পৌঁছানো ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। Reuters+1


মানবিক দিক — কাদের ক্ষতি হচ্ছে?

যুদ্ধ–অস্ত্র বিরতি না হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ নাগরিক: শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও গুরুতর অসুস্থরা। হাসপাতাল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাদ্য সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে মৃত্যু ও অসামান্য দুর্দশা বাড়ে। নিরাপদ রুট খোলা না থাকায় ত্রাণসামগ্রী সার্বজনীনভাবে পৌঁছোয় না; এতে দুর্বল জনগোষ্ঠীর ভোগান্তি তীব্র হয়। জাতিসংঘসহ মানবতাবাদী সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই অবিলম্বে অবরুদ্ধ অঞ্চলে নিরাপদ ও অবাধ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। Political and Peacebuilding Affairs+1


উপসংহার

নিরাপত্তা পরিষদের এই ঘটনার মাধ্যমে দেখা যায়—বিশ্ব বঞ্চিত অংশগুলোর ওপর মানবিক জরুরিতার কথা বলে একস্বরে দাঁড়ালেও শক্তিধর সদস্যদের কূটনৈতিক স্বার্থ ও নিরাপত্তা বিবেচনা প্রক্রিয়াকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। ভেটোতে আটকে থাকা ওই প্রস্তাবের পরিণতি সোজা—গাজার সাধারণ জনগণই আজ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বর্তমানে প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং স্থায়ী সদস্যদের এমন উদ্যোগ, যা মানবিক নীতিকে প্রাধান্য দিয়ে অবিলম্বে মানুষের জীবন রক্ষা করবে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4848 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 12:49:04 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh