• হোম > শিক্ষা > রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পুনর্বহালে উত্তাল ছাত্রসমাজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পুনর্বহালে উত্তাল ছাত্রসমাজ

  • শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬
  • ৭৭

---

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবারও ফেরানো হলো পোষ্য কোটা। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘোষণার পর থেকেই তাঁরা মিছিল, বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান, স্লোগান আর প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যান টানা চার ঘণ্টারও বেশি সময়।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবার সমান সুযোগের জায়গা। এখানে ‘পোষ্য কোটার নামে বৈষম্য’ তাঁরা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।


বৃষ্টিতে ভিজেই প্রতিবাদ

সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। মিছিল শেষে রাত পৌনে আটটার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। স্লোগানে স্লোগানে তাঁরা জানিয়ে দেন তাঁদের অবস্থান—
“পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন”
“আবু সাঈদ, মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ”
“অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন।”

রাত আটটার দিকে প্রবল বৃষ্টি নামলেও কেউ সরে যাননি। ভিজে গিয়েও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যান।


প্রশাসনের সিদ্ধান্ত

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি উপকমিটির সভায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনা হয়। সভাপতিত্ব করেন সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। পরে রাত আটটার দিকে জনসংযোগ দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এ খবর শিক্ষার্থীদের কানে পৌঁছাতেই শুরু হয় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ।


শিক্ষার্থীদের ঘোষণা

বিক্ষোভ শেষে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু ইয়াকুব বলেন—

“সব রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডারের পরামর্শে আজকের কর্মসূচি শেষ করলাম। তবে কাল (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে আমরা আবারও একসঙ্গে বিক্ষোভ করব।”


পটভূমি

  • চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব ঘোষণা দিয়েছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের পোষ্য কোটা থাকবে না।

  • তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, এমনকি ১ শতাংশ কোটা রাখার পক্ষেও তিনি নন।

  • তবে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে প্রশাসন পুনর্বিবেচনা করে।

  • সর্বশেষ দাবি না মানলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

  • এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকালই প্রশাসন নতুন সিদ্ধান্ত নেয়।


দুই পক্ষের টানাপোড়েন

একদিকে চাকরিজীবী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাবি করছেন, তাঁদের সন্তানদের ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিত করতেই এই কোটা দরকার।
অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোটা মানেই বৈষম্য। এর ফলে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হন।


উপসংহার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে দ্বন্দ্ব যেন শেষ হতে চাইছে না। একদিকে কর্মচারীদের দাবির মুখে প্রশাসনের নতি স্বীকার, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এখন দেখার বিষয়, আজ শুক্রবারের জুমার পর ঘোষিত আন্দোলন কতটা বিস্তৃত হয় এবং প্রশাসন কোন পথে এগোয়।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4839 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 04:47:15 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh