সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ১৭ সেপ্টেম্বর। কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে নতুন কৌশলগত বার্তা দিয়েছে এ চুক্তি।
চুক্তির মূল বক্তব্য
চুক্তিতে বলা হয়েছে—
-
যেকোনো একটি দেশের ওপর হামলা হলে তা অপর দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে।
-
উভয় দেশ একযোগে প্রতিরোধমূলক জবাব দেবে।
-
প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার মাধ্যমে যৌথ নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে এটিকে “অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার যৌথ প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন” বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, মুসলিম দেশগুলোর জন্য এমন চুক্তি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তাঁর ভাষায়, “এখন থেকে সৌদি আরব বা পাকিস্তান আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশ নিজেদের ওপর আগ্রাসন হিসেবে দেখবে।”
ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
-
উপসাগরীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে।
-
সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
-
চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূরাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি হতে পারে।
রয়টার্সকে এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা বলেন, “এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে চলা আলোচনার ফল।”
অনুষ্ঠান ও প্রতীকী বার্তা
চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির—যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।
ভারতের প্রসঙ্গ
চুক্তি সত্ত্বেও সৌদি আরব ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্বও তুলে ধরেছে। অজ্ঞাতনামা সৌদি কর্মকর্তা বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সবচেয়ে শক্তিশালী। আমরা আঞ্চলিক শান্তিতে অবদান রাখতে চাই।”
পারমাণবিক নিরাপত্তা প্রশ্ন
পাকিস্তান কি সৌদি আরবকে পারমাণবিক নিরাপত্তা (নিউক্লিয়ার আমব্রেলা) দেবে? এ প্রশ্নে সৌদি কর্মকর্তার জবাব ছিল, “এটি একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত করে।”