এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে দারুণ এক জয় পেল বাংলাদেশ। আবুধাবির শায়খ জায়েদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে নিজেদের বাঁচা–মরার ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়েছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দল।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে আফগানিস্তান শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করলেও ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে। এ জয়ে সুপার ফোরের আশা টিকিয়ে রাখল টাইগাররা।
ম্যাচের বাঁক বদল: পাওয়ার প্লে
বাংলাদেশের জয় আসলে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল প্রথম ৬ ওভারেই। আফগানিস্তানের রান থেমে যায় মাত্র ২৭–এ, তাও ২ উইকেট হারিয়ে। যেখানে টার্গেট ছিল ওভারপ্রতি অন্তত ৭.৭ রান, সেখানে তাদের রান রেট নেমে আসে ৪.৫–এ। এতে চাপ বাড়ে এবং প্রয়োজনীয় রান রেট উঠে যায় ৯-এর বেশি। এখানেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বাংলাদেশের হাতে।
শেষ ওভারের নাটকীয়তা
তবে শেষ দিকে আফগানিস্তান ঘুরে দাঁড়ায়। ১৫ বলে ২৯ রান দরকার ছিল, হাতে ৩ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক রশিদ খান, খেলছিলেন মাত্র ৮ বলে ১৫ রানের ঝড়ো ইনিংস। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে দারুণ চার মেরে দর্শকদের উজ্জীবিত করলেও পরের বলেই আউট হন তিনি।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২২ রান। কিন্তু তাসকিন ও মোস্তাফিজের নিখুঁত ইয়র্কার আর স্লোয়ারে মাত্র ১৩ রান তুলতে পারে আফগানিস্তান। আর সেখানেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের দারুণ জয়।
আফগানিস্তানের ভুল
হারের কারণ নিয়ে ম্যাচ শেষে রশিদ খান বলেন,
“আমরা শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম। ১৫ বলে ৩০ তোলা সম্ভব। কিন্তু আমরা নিজেদের ওপর অনেক চাপ নিয়েছি এবং অপ্রয়োজনীয় শট খেলেছি।”
আফগান ব্যাটাররা আসলেই ব্যর্থ হন চাপ সামলাতে। শুরুতে ধীরগতির ব্যাটিং ও শেষে দায়িত্বজ্ঞানহীন শট তাদের হার নিশ্চিত করে।
আফগানিস্তানের ইতিবাচক দিক
বাংলাদেশকে সহজে সুযোগ দেয়নি আফগান বোলাররাও। প্রথম ১০ ওভারে যেখানে বাংলাদেশ তুলেছিল ৮৭ রান, সেখানে পরের ১০ ওভারে তারা দিয়েছে মাত্র ৬৭ রান। রশিদ খান মনে করেন, “তাদের ১৬০-এর নিচে থামানোই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”
সামনে কী?
এই হারের পর সুপার ফোরে উঠতে হলে এখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হবে আফগানিস্তানকে। ম্যাচের আগে রশিদ স্পষ্ট জানালেন,
“এখন প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য ফাইনালের মতো। ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে, মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে হবে।”
অন্যদিকে বাংলাদেশ এই জয়ের ফলে নতুন করে আশার আলো দেখছে। দল এখন আত্মবিশ্বাসী, আরেকটি জয় তাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতেও সাহায্য করতে পারে।