প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী। ধর্ম, মত কিংবা আর্থিক অবস্থার কারণে কাউকে বঞ্চিত করার অধিকার কারও নেই।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। মতভেদ বা ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে, তবে পরিবার ভাঙা যায় না। পুরো জাতি যেন একটি অটুট পরিবার হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।”
আজ সোমবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি মন্দির পরিদর্শন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সবার প্রতি সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা। “যে ধর্মে বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই থাকুক, ধনী বা গরিব—রাষ্ট্রের কাছে সে কেবল একজন নাগরিক। নাগরিকের অধিকার সংবিধানেই সুরক্ষিত।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো সরকারের অধিকার নেই নাগরিকদের সামান্যতম পরিমাণেও বঞ্চিত করার। নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা চাই না নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। চাই নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে ধর্মীয় আচার পালন করতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে, এজন্য কৃতজ্ঞ; তবে আমাদের এমন দেশ গড়ে তুলতে হবে যেখানে উৎসব পালনে বাড়তি নিরাপত্তার প্রয়োজন হবে না।”
শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাও শেয়ার করেন। “আমি ভেবেছিলাম এবার হয়তো দুর্গাপূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবো। কিন্তু আমি জেদ ধরেছিলাম—যাবই। জাতিসংঘ অধিবেশনের কারণে নিউইয়র্কে থাকতে হলেও আমি আগেভাগে এসেছি আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহা। বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।