প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও গভীর করতে বদ্ধপরিকর।
সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত—বাংলাদেশি রপ্তানির শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা—দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের কৌশল, তুলা ও সয়াবিনসহ কৃষিপণ্য আমদানি বৃদ্ধি, জ্বালানি সহযোগিতা, এলপিজি আমদানি, বেসামরিক বিমান কেনা, মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করতে প্রস্তুত, যা ভবিষ্যতে শুল্কহার আরও হ্রাস এবং টেকসই বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব গড়তে সহায়ক হবে। তিনি দ্রুত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ১১ দফা শ্রম কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক শ্রমমান রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ ও স্বল্পসুদে ঋণের প্রত্যাশা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের সুযোগ আরও বিস্তৃত করতে সরকার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চ আলোচনায় বাংলাদেশের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ইতিবাচক অগ্রগতি ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি শুল্ক চুক্তি ও ক্রয় প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।