সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব থাকলে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘সোনার খনি’তে রূপান্তর করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, দেশের পণ্য তৈরির জন্য কাঁচামালের অভাব থাকলেও শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে এই অভাব পূরণ করতে পারবে। আল্লাহ জ্ঞানার্জনে কাউকে মনোপলি দেননি; যে যত চেষ্টা করবে, ততটাই অর্জন করতে পারবে। এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই।
উপদেষ্টা জানান, লেবার প্রডাক্টিভিটি, ইউটিলিটি প্রপোরশন, লজিস্টিক এক্সিলেন্স, কস্ট টু ফিন্যান্স, এক্সেস টু ফিন্যান্স এবং এক্সেস টু মার্কেট নিশ্চিত করা হলে কাঁচামালের অভাব মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত ‘ব্যবসার ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন এবং পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সম্মেলনের আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা গবেষণা ব্যুরো।
শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত রমজানে সরকারের অর্থ বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক ছিল, ফলে নিত্যপণ্যের দামও কমে গিয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর বাজার পরিচালনা চ্যালেঞ্জ ছিল; অনেক সিন্ডিকেটের সদস্য দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় সাপ্লাই সাইড ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তবে সঠিক প্রচেষ্টায় এই পরিস্থিতি উত্তরণে সক্ষম হওয়া গেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যেখানে পূর্বে রিজার্ভ মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলার এবং বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ৬ বিলিয়ন ডলারের দায় ছিল।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সরকারের প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অতীতের ফ্যাসিস্ট শাসকরা সম্পদের অমিল বণ্টন ও বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করেছে। কিন্তু ভবিষ্যতের সরকার যদি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে বাজার পরিচালনা করে এবং নিরপেক্ষ সংস্কার বাস্তবায়ন করে, তাহলে বাজার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তৈয়ব চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিন চৌধুরী।
পরবর্তীতে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট প্রদান করেন।