• হোম > বাংলাদেশ > সাংবাদিকতা নিয়ে জিল্লুর রহমানের সতর্ক বার্তা

সাংবাদিকতা নিয়ে জিল্লুর রহমানের সতর্ক বার্তা

  • শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৮
  • ১৭

---

বাংলাদেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গত বছরেই ১৬৭ জন সাংবাদিকের এক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়— “এটা সরাসরি রিপোর্টিং অ্যাকসেসের গলায় ছুরি চালানোর মতো।”

এ ঘটনায় সম্পাদক, সাংবাদিক সংগঠন ও অধিকারকর্মীরা একে এক ভয়ংকর নজির হিসেবে দেখছেন। কারণ, সংবাদকর্মীদের ওপর চাপ ও দমন নীতি নতুন নয়, তবে পদ্ধতি বদলালেও মূল কাঠামো এখনো একই রকম রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক সতর্কতা উপেক্ষিত

জিল্লুর রহমান উল্লেখ করেন, কেবল নোটিশ নয়, নোটিফিকেশন দিয়েও সাংবাদিকদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো বহুবার সতর্ক করলেও তাতে তেমন পরিবর্তন আসেনি।
রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস (RSF) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় অন্তত পাঁচজন সাংবাদিক নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষকে পুরনো দমন পদ্ধতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু আগস্টের পরও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।

জিল্লুর রহমান বলেন, “সবচেয়ে ভয়াবহ হলো প্রশাসনিক পুরনো রিফ্লেক্স— যেখানে একদিকে মাঠে রিপোর্টাররা হামলা-হুমকির শিকার হচ্ছেন, আরেকদিকে পর্দার আড়ালে আইনি হয়রানি চলছে।”

বিভুরঞ্জনের চিঠি ও শঙ্কিত বাস্তবতা

প্রবীণ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন আত্মহত্যার আগে একটি খোলা চিঠি লিখে গিয়েছিলেন, যা সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোড়ন তোলে। কিন্তু ঝড় থেমে গেলে আবারও পরিস্থিতি আগের জায়গায় ফিরে গেছে।
কেউ চাকরি হারাচ্ছেন, কারও বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, কোথাও আবার সংবাদকক্ষের ভেতরে মব ঢুকে পড়ছে। কিন্তু কিছুদিনের হাহাকার শেষে যেন সবকিছু আবার “স্বাভাবিক” হয়ে যায়।

জিল্লুর রহমানের ভাষায়— “এই স্বাভাবিকতাই আসলে অসুস্থতা। কারণ রাষ্ট্র, রাজনীতি ও অর্থনীতির সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের সম্পর্কটা বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা নয়; এটা আসলে একটি সিস্টেম। আর সেই সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে।”

সাংবাদিকতার মাইনফিল্ড

বাংলাদেশে সাংবাদিকতা এখন এমন এক মাইনফিল্ড, যেখানে সত্য বলার আগে প্রত্যেকে নিজের পায়ের দিকে তাকান। কারণ—

  • আইনের ভয়,

  • গোয়েন্দা সংস্থার ফোনকল,

  • এবং মালিকপক্ষের ব্যবসায়িক স্বার্থ।

সবকিছু মিলে সাংবাদিকরা এক কঠিন বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আছেন। এতে করে গণমাধ্যমের ভেতরে আত্মনিয়ন্ত্রণ, ভীতি ও অস্বচ্ছতা তৈরি হয়েছে, যা কেবল সাংবাদিকদের নয়, সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র ও সমাজের জন্যও বড় হুমকি।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4659 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 01:10:37 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh