• হোম > বিদেশ > যুক্তরাষ্ট্র-কোরিয়া সম্পর্কে টানাপোড়েন

যুক্তরাষ্ট্র-কোরিয়া সম্পর্কে টানাপোড়েন

  • বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:০১
  • ২৯

---

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে হুন্দাইয়ের যৌথ ব্যাটারি কারখানায় মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আইসের অভিযানে ব্যাপক ধরপাকড়ের ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে ‘খুবই দ্বিধাগ্রস্ত’ করে তুলছে।

গত সপ্তাহের অভিযানে মার্কিন কর্মকর্তারা মোট ৪৭৫ জন কর্মীকে আটক করেন, যার মধ্যে ৩০০ জনের বেশি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা ভিসার নিয়ম ভেঙে কাজ করছিলেন। আটক ব্যক্তিরা মূলত মেকানিক ছিলেন, যারা উৎপাদন লাইন বসানোর কাজে নিযুক্ত ছিলেন এবং বেশিরভাগই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছিলেন।

সিউল জানিয়েছে, শুক্রবার আটক ব্যক্তিদের দেশে ফেরানোর কথা থাকলেও জটিলতার কারণে তা বিলম্বিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট লি জানান, হোয়াইট হাউসের নির্দেশে বিলম্ব হয়েছে কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানতে চেয়েছেন, আটক কর্মীদের মধ্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে থেকে স্থানীয় আমেরিকান কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী কি না।

লি বলেন, ‘বিদেশে কারখানা স্থাপনের সময় কোরিয়ান কোম্পানিগুলো সাধারণত দেশ থেকে দক্ষ কর্মী পাঠায়। যদি এটি আর সম্ভব না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।’ তিনি আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিকল্প ভিসা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছে। বাড়তি কোটার মাধ্যমে বা নতুন ভিসা ক্যাটাগরি তৈরির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

এলজি এনার্জি সলিউশন, যারা হুন্দাইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই কারখানা পরিচালনা করছে, জানিয়েছে তাদের অনেক কর্মী ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। অভিযানের সময় কারখানায় আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন।

কোরিয়ার প্রধান গণমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। দোং-আ ইলবো একে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে ‘একটি বড় ধাক্কা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, দুই দেশকে দ্রুত আলোচনায় বসে ‘বন্ধুত্বের ফাটল মেরামত করতে হবে।’

তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, হুন্দাই কারখানায় অভিযানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আমেরিকানদের জন্য চাকরি সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, বৈধভাবে কর্মী আনার প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত।

এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-কোরিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মানবিক দিক থেকে আটক কর্মীদের অবস্থা এবং তাদের পরিবারের অনিশ্চয়তা এখন প্রধান আলোচনার বিষয়।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4640 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 08:28:08 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh