আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকার সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার রাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত গেজেটে ৩০০ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৩৭টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা প্রভাব ফেলবে অন্তত ৪৬টি আসনে।
ঢাকার ছয়টি আসনের সীমানায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ঢাকা-২ আসনে কেরাণীগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়ন এবং সাভারের কিছু অংশ যুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা-৪, ৫, ৭, ১০ ও ১৪ আসনের সীমানাতেও বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিরুলিয়া ইউনিয়নকে ঢাকা-১৯ আসনে ফেরত দেওয়া হলেও বনগাঁও ইউনিয়নকে রাখা হয়েছে ঢাকা-১৪ আসনে।
এদিকে বাগেরহাটে আসন সংখ্যা কমে ৪ থেকে ৩ হয়েছে। বাগেরহাট সদর, মোল্লাহাট ও চিতলমারী এখন বাগেরহাট-১ আসনের আওতায়, ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা বাগেরহাট-২ আসনে এবং কচুয়া, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা বাগেরহাট-৩ আসনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অপরদিকে গাজীপুরে আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬। নতুন সীমানায় গাজীপুর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আলাদা আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের আসনগুলোতেও পরিবর্তন এসেছে। নারায়ণগঞ্জ-৩ এ সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ এ সদর উপজেলার ফতুল্লা, এনায়েতপুর, বক্তাবলীসহ কয়েকটি ইউনিয়ন রাখা হয়েছে, আর নারায়ণগঞ্জ-৫ এ সিটি কর্পোরেশনের একাংশ ও বন্দর উপজেলা যুক্ত হয়েছে। মানিকগঞ্জ-২ ও ৩ আসনেও ইউনিয়নভিত্তিক নতুন বিভাজন করা হয়েছে।
এছাড়া পঞ্চগড়, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, সংসদীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণে নাগরিকদের দাবি-আপত্তি বিবেচনা করা হয়েছে। ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন নিয়ে মোট ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি-আপত্তির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি পরামর্শ বা সুপারিশ গৃহীত হয়।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশের সব নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারিত হলো, যা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।