• হোম > বাংলাদেশ > অটোরিকশার দোর্দণ্ড প্রতাপ: প্রধান সড়কে নামলে ট্যাক্স বন্ধের হুঁশিয়ারি

অটোরিকশার দোর্দণ্ড প্রতাপ: প্রধান সড়কে নামলে ট্যাক্স বন্ধের হুঁশিয়ারি

  • বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৩৯
  • ৫৫

---

ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর থেকেই রাজধানীজুড়ে বেড়ে গেছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য। সম্প্রতি জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক ফেসবুকে লিখেছিলেন, “মেইন রাস্তায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চললে গাড়ির ট্যাক্স দেবো না।” তাঁর এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। একের পর এক পোস্ট, লাইক-কমেন্ট ও শেয়ারে ছড়িয়ে পড়ছে একই ক্ষোভ।

ট্যাক্স না দেওয়ার ক্ষোভের পেছনের কারণ

প্রাইভেট গাড়ির মালিকরা কেন এমন ঘোষণা দিচ্ছেন? এর মূল কারণ অটোরিকশা চালকদের লাগামহীন দৌরাত্ম্য।

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির আগস্ট মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ৪৯৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত এবং ১,২৩২ জন আহত হয়েছেন। পর্যালোচনায় দেখা যায়, এসব দুর্ঘটনার বড় একটি অংশের জন্য দায়ী ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা।

একজন গাড়ির মালিক প্রতিবছর সিসি অনুযায়ী ৩৫ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স পরিশোধ করেন। একাধিক গাড়ির মালিকদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকাও দিতে হয়। বিপরীতে অটোরিকশাগুলো কোনো কাগজপত্র ছাড়াই চলছে, বিদ্যুৎ চুরি করে চার্জ হচ্ছে। এতে একদিকে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে লোডশেডিং ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বিদ্যুৎ চুরি ও গোপন আশ্রয়

গ্যারেজগুলোতে বিদ্যুৎ মিটার নেই, অবৈধ লাইন টেনে প্রতিদিন শত শত অটোর চার্জ দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে এই সিন্ডিকেট। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে কৃষকরা ফসলের সেচে বিদ্যুতের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনায় ভোগান্তিতে পড়ছেন।

গোপন সূত্র বলছে, রাজধানীর অনেক অটোরিকশা চালক আসলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী। তারা আত্মগোপন করতেই এই পেশায় নেমেছেন। হাসিনা পতনের পর আন্দোলন, গালি-গালাজ ও মব তৈরি—সব জায়গায় তাদেরই সম্পৃক্ততা ধরা পড়ছে।

পরিবর্তিত আচরণ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি

অতীতে রিকশা চালকদের ব্যবহার ছিল নমনীয়। কিন্তু এখন অটোর চালকদের অশ্রাব্য ভাষা, বেপরোয়া আচরণ ও অবহেলা সাধারণ মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমধ্যেই তারা প্রাইভেট গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, আবার উল্টো বাজে আচরণ করছে গাড়ির মালিকদের সঙ্গেই।

এরা সুযোগ পেলেই উঠে যাচ্ছে মেইন রোড, ভিআইপি জোন এমনকি এক্সপ্রেসওয়েতেও। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় এসব অটোরিকশা চলতে দেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক। বরং নিয়ন্ত্রিতভাবে গ্রামাঞ্চল বা উপজেলা শহরে সীমিত সংখ্যায় চলাচলের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

জরুরি করণীয়

যানবাহন মালিকদের ট্যাক্স না দেওয়ার হুঁশিয়ারি এখন বড় আলোচনার ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। অন্যথায় এই সংকট আরও প্রকট হয়ে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4459 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 01:07:32 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh