দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ মার্চ সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং দলীয় পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের বিনিময়ে প্রায় ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করা হয়। এর মূল সুবিধাভোগী ছিলেন জিএম কাদের।
পদ বাণিজ্য ও প্রভাব
চুক্তি অনুযায়ী অর্থ না দেওয়ায় অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার জায়গায় সংসদ সদস্য হন শেরীফা কাদের।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, দলীয় কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৩০১ সদস্যের পরিবর্তে ৬০০–৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পদ বাণিজ্যের সরাসরি প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
অর্থপাচারের অভিযোগ
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, জিএম কাদের ভিন্ন ভিন্ন নামে সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও সিডনিতে বিপুল অর্থ পাচার করেছেন। এই অর্থ দলীয় পদ বাণিজ্য, মনোনয়ন বাণিজ্য এবং বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।
সম্পদের হিসাব
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী—
-
জিএম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকার জিপ গাড়ি রয়েছে।
-
শেরীফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি রয়েছে।
-
এছাড়া তাদের স্থাবর সম্পদের মধ্যে লালমনিরহাট ও ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট অন্তর্ভুক্ত।
রাজনৈতিক পরিচিতি
১৯৯৬ সাল থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া জিএম কাদের বর্তমানে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অতীতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এবং বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।