• হোম > বাংলাদেশ > বিচার বিভাগে সংস্কার কর্মসূচির প্রায় ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগে সংস্কার কর্মসূচির প্রায় ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে : প্রধান বিচারপতি

  • রবিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৫, ২৩:২৮
  • ৭১

---

বিচার বিভাগে ঘোষিত সংস্কার কর্মসূচির প্রায় ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আজ রবিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: বিচার বিভাগের সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগে ঘোষিত সংস্কার কর্মসূচির প্রায় ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছে। আশা করছি বাকি পদক্ষেপগুলোও সরকারের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। বিচার বিভাগের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের  আচরণে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং দেশের প্রতিটি আদালতে সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রসার ঘটাতে হবে।’

দেশের বিচার বিভাগ পূর্ণ স্বাধীনতা, শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগকে ন্যায্যতা, সাহস ও সততার সাথে জনগণকে সেবা দিতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্টের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে আশাবাদী প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সরকারের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুরোর মধ্যে একটি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা। এটি হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতার পৃথকীকরণ সাংবিধানিকভাবে আরও সুদৃঢ় হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে বিচারক নিয়োগের ন্যায্যতার ওপর। এ ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হচ্ছে- সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল কার্যকর করা। এর মাধ্যমে কলেজিয়ামভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই পদ্ধতি বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ল্যাটিমার হাউস (গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ঐকমত্য ঘোষণা) নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার মানদণ্ড অনুসরণ করে বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বিচার বিভাগের ওপর জনআস্থা পুনরুদ্ধার করেছে। আর তরুণ প্রজন্মকে আশ্বস্ত করেছে, যোগ্যতা ও সততাই এখন বিচারক নির্বাচনের মূল ভিত্তি।’

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ন্যায়বিচার যেমন স্বাধীনতার ভিত্তি, তেমনি বিশ্ব অর্থনীতিতে টিকে থাকার জন্য বাণিজ্যিক ন্যায়বিচার গুরুত্বপূর্ণ। বিচারে দীর্ঘসূত্রতার কারণে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা কাজ করে। সেই দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে প্রশিক্ষিত বিচারক, ডিজিটাল ফাইলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন আদালত গঠনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই বিশেষায়িত আদালত চালু হলে বাংলাদেশের প্রতি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। চুক্তি বাস্তবায়নে দ্রুততা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত হলে দেশ বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে। আইন বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, উদ্যোগটির বাস্তবায়ন হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে আলোচনা  অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টেও সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী এবং বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4301 ,   Print Date & Time: Wednesday, 26 November 2025, 10:06:56 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh