ই-বাংলাদেশ ডেস্ক
বাংলাদেশে টেকসই ফাইন্যান্স (Sustainable Finance Bangladesh) দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো টেকসই ফাইন্যান্স হিসেবে ৩৫,৩৮৭ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি।
২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে ঋণ ছিল ২৫,২৯০ কোটি টাকা। তবে ২০২২ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এ বৃদ্ধিকে অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গ্রিন ফাইন্যান্সের (Green Finance Bangladesh) অগ্রগতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর গ্রিন ফাইন্যান্স প্রায় ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২,৭৭৫ কোটি টাকায়। যদিও আগের প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২) এ পরিমাণ ছিল ৪,০৫০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (NBFIs) গ্রিন ক্রেডিট দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩৯ কোটি টাকায়, যা এক বছর আগে ছিল ৪০৯ কোটি টাকা।
টেকসই উন্নয়ন ফাইন্যান্সের (Sustainable Development Finance Bangladesh) বিস্তার
বাংলাদেশে গ্রিন ফাইন্যান্স ও টেকসই ঋণ ২০১৯ সালের ১.২২% থেকে বেড়ে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৫.০৮%-এ। একইভাবে, সামগ্রিক টেকসই ফাইন্যান্স ২০২১ সালে ৮২,৫৫১ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ১,৩০,৭৬২ কোটি টাকা।
এটি মোট ঋণের ১৩.৭৭ শতাংশ হিস্যা, যা দেশের সবুজ বিনিয়োগ (Green Investment Bangladesh) বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
কোন ব্যাংকগুলো এগিয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৬১টির মধ্যে ৫৬টি ব্যাংক এবং ৩৪টির মধ্যে ১৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান টেকসই ফাইন্যান্সে বিনিয়োগ করেছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (RAKUB) – ৬৪.৫৭%
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক – ৫৬.৪২%
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক – ৩৯.৮১%
ন্যাশনাল ব্যাংক – ৩৫%
গ্রিন ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে:
এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, শিমান্ত ব্যাংক।
অন্যদিকে, এনবিএফআইগুলোর মধ্যে Bangladesh Infrastructure Finance Fund, Infrastructure Development Company, UAE-Bangladesh Investment Company গ্রিন ফাইন্যান্সে লক্ষ্য অর্জন করেছে।
টেকসই ফাইন্যান্স কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, একটি উদীয়মান অর্থনীতির জন্য পরিবেশবান্ধব ব্যবসা ও বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। টেকসই ফাইন্যান্স শুধুমাত্র আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করছে না, বরং দেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, পরিবেশ সুরক্ষা ও সবুজ অর্থনীতি (Green Economy Bangladesh) গঠনে বড় ভূমিকা রাখছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঠিক দিকনির্দেশনা ও বিনিয়োগ নীতি বাংলাদেশকে একটি সবুজ ও টেকসই অর্থনীতির পথে এগিয়ে নিতে সক্ষম।