• হোম > বাংলাদেশ > অতীতের পুনরাবৃত্তি: গণতন্ত্রের পথে নতুন শঙ্কা

অতীতের পুনরাবৃত্তি: গণতন্ত্রের পথে নতুন শঙ্কা

  • রবিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১৫:০০
  • ৭০

---

বাংলাদেশের গণতন্ত্র দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক স্বার্থের লড়াইয়ে জর্জরিত। অতীতের শাসনব্যবস্থার পতন থেকে সৃষ্ট ক্ষমতার শূন্যতাকে রাজনৈতিক দলগুলো নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছে। এতে সত্য, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থ বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। একের পর এক সরকার ইতিহাস বিকৃত করেছে, সংসদ ও বিচার বিভাগকে দুর্বল করেছে, আর নির্বাহী বিভাগকে অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতায় বসিয়েছে।

ক্ষমতার লালসায় গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত

বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে শুরু করে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা—সবাই সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে সংবিধানকে নিজেদের সুবিধামতো সংশোধন করেছেন। এর ফলে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি চেক অ্যান্ড ব্যালান্স ধ্বংস হয়ে গেছে। সংসদীয় সংস্কৃতি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়েছে ঘন ঘন ওয়াকআউট, বয়কট ও পদত্যাগের মতো কর্মকাণ্ডের কারণে।

বাকশাল থেকে দায়মুক্তি আইন: ইতিহাসের কালো অধ্যায়

একদলীয় শাসন, বাকশালের প্রবর্তন কিংবা জিয়ার দায়মুক্তি আইন—সবই ছিল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। সামরিক শাসনের হাত ধরে সংবিধান বারবার বিকৃত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ইতিবাচক ব্যবস্থা থাকলেও তা দলীয় স্বার্থে বাতিল করে দেওয়া হয়। এর ফলেই আমরা দেখেছি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন।

নারী প্রতিনিধিত্বের সংকট

সবচেয়ে হতাশাজনক দিক হলো নারী ভোটারদের উপেক্ষা। জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নারী কণ্ঠ প্রায় ছিল না। এত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিলে নারী প্রতিনিধি অনুপস্থিত থাকা শুধু ন্যায়বিচারের পরিপন্থী নয়, বরং একধরনের নৈতিক অপরাধ।

আদালতের বাইরে সংবিধান?

‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর কিছু প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে আদালতে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এটি গণতন্ত্রকে দুর্বল করে আরও স্বৈরতান্ত্রিক ধারার জন্ম দিতে পারে। সংবিধান জনগণের জন্য, তাই তার যেকোনো অংশ পরিবর্তনযোগ্য হতে হবে। অ-সংশোধনযোগ্য ধারা তৈরি মানে জনগণের অধিকার খর্ব করা।

সুযোগ হাতছাড়া করার শঙ্কা

এখনো বাংলাদেশের হাতে অসাধারণ সুযোগ রয়েছে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর পুরোনো অভ্যাস ও ক্ষমতার লালসা আবারও সেই সুযোগ হারানোর আশঙ্কা তৈরি করছে।

আজকের এই বাস্তবতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—

-অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা না নিলে ভবিষ্যৎ আবারও অন্ধকারেই ঢেকে যাবে।

-নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই পূর্ণতা পাবে না।

-সংবিধান জনগণের, একে আবারও জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।

 


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4273 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 08:37:38 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh