• হোম > অর্থনীতি > মার্কিন বাজারে ভারতের ওপর বাড়তি শুল্কে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ

মার্কিন বাজারে ভারতের ওপর বাড়তি শুল্কে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ

  • রবিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০৯
  • ৪৬

---

ভারতের রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রপ্তানি আদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের মতে, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকরা যদি এ সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেন, তবে বাংলাদেশ কয়েক বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রপ্তানি অর্জন করতে সক্ষম হবে।

৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ১৯ শতাংশ, বাংলাদেশের পণ্যে ২০ শতাংশ এবং ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তবে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে অতিরিক্ত ‘জরিমানা’ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান। ফলে ভারতীয় পণ্যে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের উচ্চ শুল্কের কারণে ভারত তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত দ্রব্য, হিমায়িত মাছ ও আসবাবপত্র খাতে প্রতিযোগিতা হারাবে। আর এসবই বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য হওয়ায় মার্কিন অর্ডার বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে অর্ডার স্থানান্তর হবে অন্য দেশে। এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চীন ও মিয়ানমারে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে প্রথম সারিতে।” তার মতে, সঠিক প্রস্তুতি থাকলে বাংলাদেশ অতিরিক্ত ২–৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বাড়াতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বন্দর দক্ষতা বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, শ্রমিক অস্থিরতা নিরসন এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। একইসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জটিলতা ও কাস্টমস সমস্যার সমাধানও প্রয়োজন।

ব্যবসায়ী নেতারাও বিষয়টিকে ইতিবাচক সুযোগ হিসেবে দেখছেন। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ভারতের কাছ থেকে কিছু অর্ডার বাংলাদেশে চলে আসবে। তবে এর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো, লিড টাইম কমানো এবং মহাসড়কসহ অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান জরুরি।

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, জ্বালানি সংকট মোকাবিলা এবং কাস্টমস জটিলতা নিরসন করতে পারলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বড় ধরনের সুবিধা নিতে পারবে। তার মতে, অন্তর্বর্তী সরকারকে শিল্প খাত ঘিরে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো বিচক্ষণতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় ৮.২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে, বিপরীতে আমদানি করে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার পণ্য। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি অংশীদার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানি ছিল ৪৩৪ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ—৮৬.৫ বিলিয়ন ডলার—যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গেছে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4250 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 08:11:52 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh