রাজশাহীতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এই বিক্ষোভ চলাকালে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে এক ঘণ্টার জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভ ও হামলার সূত্রপাত:
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী শহরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ছিল রাজশাহীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন— ‘জাতীয় পার্টি স্বৈরাচার, প্রশাসন পাহারাদার’, ‘আপা গেছে যে পথে, জাপা যাবে সে পথে’, ‘আমার ভাইকে মারল কেন, ক্যান্টনমেন্ট জবাব চাই’ ইত্যাদি। মিছিলটি শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তারা ঢাকায় নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দোষারোপ করেন।
জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা:
মিছিল চলাকালে কিছু কর্মী রাজশাহীর গণকপাড়া মোড়ে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালান। তারা অফিসের দরজা ও জানালা ভাঙচুর করেন এবং ভেতরের আসবাবপত্র ও ছবি রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেন। এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, “পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই হামলার ঘটনা ঘটে। তদন্ত চলছে এবং অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বক্তব্য ও দাবী:
মিছিলে অংশ নেওয়া নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি চলাকালে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের সহযোগীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তারা সেনাবাহিনী ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কঠোর সমালোচনা করেন এবং দাবি করেন, অভিযুক্তদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
রাজশাহী জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ এখনো হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
এদিকে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে হামলা ও সহিংসতার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।