• হোম > বাংলাদেশ > পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের সুপারিশ জমা

পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের সুপারিশ জমা

  • বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৪৮
  • ৮৬

---

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোয় দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এক ধরনের বঞ্চনার গল্প আজ নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বহু সরকারি কর্মকর্তা কর্মজীবনে নানা সীমাবদ্ধতা ও জটিলতার কারণে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অবসরে যাওয়ার পরও সেই আক্ষেপ যেন তাদের জীবনের অংশ হয়ে থেকেছে।

এই বাস্তবতায় অবসরপ্রাপ্ত বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান।


প্রতিবেদনের পটভূমি

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে চাকরিজীবনে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়ে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করার জন্য ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

প্রথম ধাপে কমিটি উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।


দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম

দ্বিতীয় ধাপে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য যেসব ক্যাডারে ৩য় গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদ রয়েছে, সেসব কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়।

 

  • মোট আবেদন পড়ে: ৩১৮টি

  • এর মধ্যে ৬৮টি কমিটির আওতাবহির্ভূত

  • তাই বিবেচনাযোগ্য আবেদন থাকে: ২১০টি

  • এই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করতে কমিটি ১৪টি সভা করে। প্রতিটি সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে মতামত দেন।


    সুপারিশের সারসংক্ষেপ

    কমিটি দীর্ঘ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করে।

    • গ্রেড-১ পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ: ১২ জন

    • গ্রেড-২ পদে: ৩২ জন

    • গ্রেড-৩ পদে: ৩৪ জন

    •  মোট সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তা: ৭৮ জন

    এর মধ্যে:

    • ৬ জনকে ৩ ধাপ পদোন্নতি

    • ১৭ জনকে ২ ধাপ পদোন্নতি

    • ৫৫ জনকে ১ ধাপ পদোন্নতি

    অন্যদিকে, ১৩২ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রে কেন সুপারিশ করা হয়নি তার বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করেছে কমিটি।


    মানবিক তাৎপর্য

    একজন সরকারি কর্মকর্তা জীবনের সেরা সময়টা দেশের সেবায় উৎসর্গ করেন। কর্মজীবনে ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হলে সেই আক্ষেপ শুধু তার ব্যক্তিগত জীবনে নয়, পরিবার ও সমাজেও প্রভাব ফেলে।

    ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির এই সুপারিশগুলো হয়তো অবসরপ্রাপ্ত সেই কর্মকর্তাদের সরাসরি আর্থিক সুবিধা দেবে না, কিন্তু এটি তাদের আত্মমর্যাদা, সম্মান এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।


    উপসংহার

    প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। এসময় তার মুখ্যসচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনের এই দ্বিতীয় ধাপ বাংলাদেশে প্রশাসনিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

  • ৪০টি আবেদন তথ্যগতভাবে অসম্পূর্ণ

     


  • This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/4003 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 07:35:14 PM
    Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
    © 2025 Entrepreneur Bangladesh