আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় আস্থার সংকট তৈরি হওয়ায় মানুষ বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়।
শনিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আসিফ নজরুল বলেন, “আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের একটি বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারবেন না কেন? কেন মানুষ বিদেশে যেতে চাইবে? ভারত ও ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। এখানে সেবা পেলে মানুষ কখনোই বিদেশে যাবে না। যাওয়ার কোনো কারণ নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, অনেক হাসপাতাল অযথা রোগীদের অসংখ্য টেস্ট করতে বাধ্য করছে। নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার বাসার এক হেল্পিং হ্যান্ডকে একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দেওয়া হয়েছিল। সে রাগ করে বাড়ি চলে যায় এবং টেস্ট ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার এই অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।”
ওষুধ কোম্পানির প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল? দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি মধ্যস্বত্বভোগী? প্রাইভেট ক্লিনিকে কেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখা হয়?”
নার্স ও হাসপাতাল কর্মীদের কম বেতনকেও স্বাস্থ্যসেবার মানহ্রাসের বড় কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, “নার্সরা মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন পান। তারা যদি ন্যায্য পারিশ্রমিক না পান, তাহলে মন খারাপ নিয়েই সেবা দেবেন। অথচ হাসপাতাল মালিকরা কোটি টাকার বাগানবাড়ি করেন। আপনারা লাভ করুন, তবে ন্যায্যভাবে করুন।”
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির সময় প্রমাণ হয়েছে দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা রয়েছে। তাই সামান্য লাভ কমিয়ে হলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রাপ্য বেতন-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।