বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে বিএনপি মিলে-মিশে দেশ পরিচালনা করবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার এবং নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে, ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি দেশের নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে দেশ গড়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর এখন জনগণের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়েছে, আর এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি নেতাকর্মী ও সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জনগণের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বলেন—“ভোট দিলে ধানের শীষে দেশ গড়বো মিলে-মিশে।”
তিনি এই বক্তব্য দেন মঙ্গলবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘যুব সমাজের প্রত্যাশা ও বিএনপি’র পরিকল্পনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে আগামী দিনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, আর বেকারদের কর্মসংস্থানই তাদের মূল লক্ষ্য। জনগণ প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তন চাইছে, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়—প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন এখন জরুরি। এজন্য প্রতিটি সেক্টরে কিভাবে বিএনপির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়, সেই বিষয়ে তারা কাজ করছে এবং ক্ষমতায় গেলে এসব পরিকল্পনা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে।
দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের গুরুত্ব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দেশের বর্তমান জনসংখ্যার অধিকাংশই কর্মক্ষম বয়সে রয়েছে, যা ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ হিসেবে একটি বড় সুযোগ। তিনি মনে করেন, যদি তরুণ-যুব সমাজকে কারিগরি নির্ভর শিক্ষায় দক্ষ করে তোলা যায়, তবে এই জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ হবে। একই সঙ্গে তিনি খেলাধুলায় আগ্রহী তরুণদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি জানান, বিএনপি ‘নতুন কুড়ি’ কর্মসূচি পুনরায় চালু করবে এবং তাতে খেলাধুলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে, যাতে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা পেশা হিসেবে খেলাধুলাকে বেছে নিতে পারে।
তারেক রহমান আরও বলেন, এখন আর স্লোগান নির্ভর রাজনীতিতে জনগণ আগ্রহী নয়; বরং তারা চায় বাস্তবায়িত প্রতিশ্রুতি। তাই বিএনপি স্লোগান নয়, বাস্তবায়নমুখী রাজনীতিতে মনোযোগ দিচ্ছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএস জিলানী, সঞ্চালনা করেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, নাট্য নির্মাতা, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।