ঢাকা, ১১ আগস্ট — শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, জুলাই–আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা ছিল অকল্পনীয়; মাত্র এক মাসে ছাত্র–জনতার জীবন বিসর্জন ছিল অবর্ণনীয়। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে মূল লক্ষ্য ছিল একটি কার্যকর কাঠামো দাঁড় করানো, যাতে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এগিয়ে যেতে পারে।
রবিবার বনানীর লেকশোর হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়ন শুধু মেট্রোরেল বা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ নয়; পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ না করলে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩৮ হাজার শ্রমিকের আন্দোলনের উদাহরণ টেনে তিনি জানান, ওই পরিস্থিতি অন্য কারখানার উৎপাদনেও ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গার্মেন্টস খাতে দুর্বৃত্তায়ন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ কিছু প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় ঋণের সুযোগ নিয়ে ব্যাংকিং খাতকে দুর্বল করেছে—যা অর্থনীতির জন্য হুমকি। এ ছাড়া ‘কর্মসংস্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং পলাতক মালিকদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।
নির্মাণ শ্রমিকদের শ্রম আইনের আওতায় আনতে না পারার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেন, কনস্ট্রাকশন কোম্পানিগুলোকে লভ্যাংশের একটি অংশ শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে জমা দিতে বাধ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তারা সরকারি প্রকল্পে অংশ নিতে পারবে না। পাশাপাশি শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ শ্রম আইন–২০০৬-এ অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়াও চলমান।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। কী–নোট উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিটিএমইএ ও বিজিএমইএ নেতারা, শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।