• হোম > বিদেশ > ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতিতে বড় ধাক্কা: শেইন, টেমু ও সাশ্রয়ী অনলাইন কেনাকাটার যুগ শেষের পথে?

ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতিতে বড় ধাক্কা: শেইন, টেমু ও সাশ্রয়ী অনলাইন কেনাকাটার যুগ শেষের পথে?

  • রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৩:০৫
  • ৩৩

---


নিউইয়র্ক প্রতিনিধি:

যুক্তরাষ্ট্রে ছোট মূল্যের আন্তর্জাতিক পণ্য আমদানিতে চালু থাকা “ডি মিনিমিস” শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে শেইন (Shein), টেমু (Temu) এবং টিকটক শপ-এর মতো চীনা ই-কমার্স জায়ান্টরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এর প্রভাব সরাসরি মার্কিন ভোক্তাদের উপর পড়বে।

কি ছিল ‘ডি মিনিমিস‘ নিয়ম?

ডি মিনিমিস হলো এমন এক বাণিজ্যিক নিয়ম, যার আওতায় $800 ডলারের কম মূল্যের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক (ডিউটি) মাফ ছিল। গত কয়েক বছরে চীন ও হংকং থেকে কোটি কোটি ছোট প্যাকেজ এই সুবিধার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে, বিশেষ করে শেইন ও টেমুর মতো কোম্পানির মাধ্যমে।

নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব কী হবে?

ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২৯ আগস্ট থেকে বিশ্বের সব দেশ থেকে আসা ছোট প্যাকেজেও আমদানি শুল্ক দিতে হবে। এর ফলে চীন, হংকং এমনকি বিকল্প রুট যেমন ভিয়েতনাম থেকেও আর কোনো ‘ব্যাকডোর‘ দিয়ে শুল্ক এড়ানো যাবে না। এখন থেকে পণ্যের উৎস দেশ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে মার্কিন কাস্টমসে।

উদাহরণস্বরূপ:

●      যদি কোনো দেশের উপর শুল্কহার ১৬%-এর নিচে হয়, তবে প্রতি পণ্যে প্রায় $৮০ কর দিতে হবে।

●      ১৬% থেকে ২৫% হলে $১৬০

●      ২৫% এর বেশি হলে $২০০ পর্যন্ত কর আরোপ হতে পারে।

চীনা কোম্পানির কৌশল বদল

ডি মিনিমিস সুবিধা বাতিল হওয়ার পর, টেমু ও শেইন ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় গুদাম তৈরি করে বাল্ক শিপমেন্ট শুরু করেছিল, যাতে করে দ্রুত ডেলিভারি সম্ভব হয় এবং খরচ কম থাকে। কিন্তু এই স্টক শেষ হয়ে গেলে এবং নতুন পণ্যে কর আরোপ শুরু হলে, দাম বাড়তে বাধ্য।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গরিব ভোক্তারা

এক গবেষণা বলছে, ডি মিনিমিস সুবিধায় পাঠানো প্রায় ৪৮% প্যাকেজ পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দরিদ্র এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। সাশ্রয়ী মূল্যে জামাকাপড় বা ঘরের পণ্য কেনার এই পথ এখন তাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। বিপরীতে ধনী এলাকায় এই প্যাকেজ যায় মাত্র ২২% ক্ষেত্রে।

বিকল্প আছে কি?

বর্তমানে কোনো দেশ থেকেই ডি মিনিমিস সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না, তাই নতুন করে উৎপাদন, গুদামজাতকরণ এবং শিপিং কৌশল সাজানো ছাড়া কোম্পানিগুলোর সামনে আর কোনো উপায় নেই। কিছু কোম্পানি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বা অ্যাসেম্বলি স্থাপন করার চিন্তা করবে, কিন্তু তাতে খরচ আরও বাড়বে।

বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন রূপ

এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের দীর্ঘমেয়াদি “বিগ বিউটিফুল বিল“–এরই একটি ধাপ, যেখানে ২০২৭ সাল নাগাদ বিশ্বের সব দেশের জন্যই ডি মিনিমিস বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। এবার তা সময়ের আগেই কার্যকর করা হলো। এতে করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও জটিল আকার নিচ্ছে এবং সাধারণ আমেরিকান ক্রেতার পকেটেই এর খরচ পড়বে।

উপসংহার:
 ডি মিনিমিস বাতিলের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব ই-কমার্স খাতকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। শেইন, টেমু বা টিকটক শপের মতো চীনা জায়ান্টদের জন্য এটি বড় ধাক্কা হলেও, এর চেয়েও বড় প্রভাব পড়বে সেইসব মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের উপর যারা অল্প দামে কেনাকাটার জন্য এই প্ল্যাটফর্মগুলোর উপর নির্ভর করতেন।

 

 


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/3602 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 06:46:40 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh