বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিএনপির প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর দেশের মানুষ ভালো কিছুর পরিবর্তনের জন্য বিএনপির কাছেই সবচেয়ে বেশি আশা করে। প্রতিটি নাগরিকই চায়, বাংলাদেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আসুক। শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে অনুষ্ঠিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে পেরেছে এবং চায় সামনের দিনগুলো আরও ভালো হোক। ওই তারিখের পর নিরপেক্ষ মানুষও বিএনপির কাছে ভালো কিছুর পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে, তাই দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও বাড়াতে হবে। সম্মেলনের শুরুতেই তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিত করায় দেশের চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি স্মরণ করেন, গত ১৫ বছরে হাজারো মানুষ খুন, সহিংসতা, নিখোঁজ এবং আঘাতের শিকার হয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পেরিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের বিদায়ের পর মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস নিয়েছিল। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের মনে নতুন করে বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যাশা জেগে উঠেছে। তারেক রহমানের মতে, এখন মানুষের মূল প্রত্যাশা একটি স্বস্তির বাংলাদেশ, আর সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেই প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে গণতন্ত্রের ভিত্তি ধীরে ধীরে শক্তিশালী করতে হবে। সঠিক ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেলে জবাবদিহিতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত হবে। রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি। তারেক রহমান জানান, বর্তমানে যেসব রিফর্ম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তার ৯৯ শতাংশ প্রস্তাবই বিএনপি আড়াই বছর আগে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল।
ড্যাবের কাউন্সিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই—এমন দাবি পুরোপুরি সত্য নয়। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন এবং খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে দেশ পরিচালনা করেছেন। তাই বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব এই ধারা অব্যাহত রাখা এবং ধীরে ধীরে তার ভিত শক্ত করা।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন নিয়ে যে প্রস্তাব রয়েছে, তা বাস্তবায়নে চিকিৎসক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। একা সরকার বা দলীয় সংসদ সদস্যরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারবে না, এজন্য ড্যাবের প্রতিটি সদস্য ও কাউন্সিলরের সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।