মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ১০০ শতাংশ সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক থেকে ছাড় পাচ্ছে তাইওয়ানের চিপ নির্মাতা জায়ান্ট টিএসএমসি (TSMC)। বৃহস্পতিবার তাইপে থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে তাইওয়ানের সরকার।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চুক্তিভিত্তিক চিপ প্রস্তুতকারী এই প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপল ও এনভিডিয়ার মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের জন্য চিপ তৈরি করে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের প্রধান লিউ চিন-চিং সংসদে এক ব্রিফিংয়ে জানান, “যুক্তরাষ্ট্রে টিএসএমসি’র নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র থাকায় তারা এই শুল্কের আওতায় পড়ছে না।” তিনি আরও বলেন, “তবে তাইওয়ানের অন্যান্য চিপ নির্মাতারা ১০০ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়বে, যদিও প্রতিদ্বন্দ্বী চীনসহ অন্যান্য দেশগুলোর কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।”
লিউ চিন-চিং বলেন,
“তাইওয়ান বর্তমানে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যদি নেতা ও প্রতিযোগীরা একই শুরুর লাইনে দাঁড়ায়, তবে নেতাই নেতৃত্বে থাকবে।”
তিনি এটিকে ‘প্রাথমিক মূল্যায়ন’ হিসেবে বর্ণনা করে জানান, সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দিতে নীতিগত প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে বলেন,
“আমরা চিপ ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছি।”
তবে এই শুল্ক কখন কার্যকর হবে, তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি।
ট্রাম্প আরও জানান, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থাপন করছে অথবা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা এই শুল্কের আওতামুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি চিপ এবং প্রায় সব উন্নতমানের সেমিকন্ডাক্টর তাইওয়ানে উৎপাদিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে টিএসএমসি’র বৃহৎ বিনিয়োগ (১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি) এবং ভবিষ্যত সম্প্রসারণ পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে এই শুল্ক ছাড়কে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ছাড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে ট্রাম্প এর আগে একাধিকবার তাইওয়ানকে ‘মার্কিন চিপ ইন্ডাস্ট্রি চুরি’ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন, যার ফলে এই ছাড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
শুল্ক ছাড়ের পাশাপাশি, তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়ানো, মার্কিন জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি এবং প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির ৩% এর বেশি বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে তাইওয়ানের অন্যান্য পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যদিও সেমিকন্ডাক্টর খাত আপাতত সেই শুল্কের বাইরে রাখা হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের আলোচকরা একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।