• হোম > বাংলাদেশ > তারেক রহমানের উত্থান: নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথে নেতৃত্ব, কৌশল ও নারীর ক্ষমতায়ন

তারেক রহমানের উত্থান: নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথে নেতৃত্ব, কৌশল ও নারীর ক্ষমতায়ন

  • সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫, ২০:০২
  • ১১৫

 ---

ই- বাংলাদেশ ডেস্ক বাংলাদেশের রাজনীতির টালমাটাল প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের কেন্দ্রবিন্দুতে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাসিত অবস্থায় থেকেও তার নেতৃত্ব ও দূরদর্শী কৌশল তাকে আবারও জাতীয় রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে তার বৈঠক এবং নারী জাগরণ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা নিয়ে তার ভার্চুয়াল ভাষণ — উভয়ই প্রমাণ করে যে, তারেক রহমান আর কেবল একটি দলের নেতা নন, তিনি হয়ে উঠেছেন একটি গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের প্রতীক।

লন্ডন বৈঠক: দ্বন্দ্বের অবসানে কূটনৈতিক অগ্রগতি ২০২৫ সালের জুনে লন্ডনে অনুষ্ঠিত তারেক রহমান ও ইউনূসের আলোচিত বৈঠকটি ছিল রাজনৈতিক মেরুকরণ থেকে সমঝোতার দিকে এক বড় পদক্ষেপ। বিএনপি ডিসেম্বর ২০২৫-এ নির্বাচন দাবি করছিল, কিন্তু ইউনূস সরকার নির্বাচন দিতে চাচ্ছিল ২০২৬ সালের এপ্রিলের পর। রাজনৈতিক অচলাবস্থার হুমকির মুখে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তারা ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে একমত হন। এই সিদ্ধান্তকে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে দেশজুড়ে সমর্থন জানানো হয়। বাংলাদেশে দ্বিদলীয় নেতাদের মধ্যে এমন সম্মিলিত কূটনৈতিক প্রয়াস খুবই বিরল। এই বৈঠক জাতির জন্য একটি বার্তা দেয়: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ একমাত্র সংঘাত বা শক্তি প্রয়োগে নয়, বরং সমঝোতার মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে।

নেতৃত্বে দূরদর্শিতা এবং প্রযুক্তিনির্ভর সংগঠন গঠন ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে থাকা তারেক রহমান ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। হোয়াটসঅ্যাপ ও জুম ব্যবহার করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সংযুক্ত রেখে তিনি একটি বিকেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করেছেন। তারেক রহমানের ভাষায়, “একজন নেতার কাজ শুধু নেতৃত্ব দেওয়া নয়, প্রতিটি কর্মীর কণ্ঠ শোনা।” এর ফলে, আন্দোলনের সময় দলের প্রতিক্রিয়া ছিল দ্রুত এবং সমন্বিত।

নারীর ভূমিকা: নতুন বাংলাদেশ গঠনের মেরুদণ্ড সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তারেক রহমান বলেন, “মায়ের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে— সে জন্য মা-বোনদের সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি জানান, বিএনপি “পরিবার কার্ড” নামে একটি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে দেশের ৫০ লক্ষ প্রান্তিক পরিবারে মাসিক আর্থিক সহায়তা বা খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া হবে এবং কার্ডটি থাকবে পরিবারপ্রধান নারী সদস্যের নামে। এটি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন প্রজন্ম ও নারী উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা তারেক রহমান আরও বলেন, “এই যুগ বিশ্বায়নের। নারীরা এখন শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ পাচ্ছেন — শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী। আমরা যদি সত্যিই দেশকে এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার দক্ষতা গড়ে তুলতে হবে।” এই বক্তব্য দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপ কমিউনিটির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপির নতুন নেতৃত্বে নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ও উদ্ভাবনী উদ্যোগে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি থাকছে।

চ্যালেঞ্জ: জেনারেশন জেডের আস্থা অর্জন যদিও তারেক রহমান দলের নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী, তবে তার সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ — জেনারেশন জেড। এই তরুণরা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল। তারা অতীতের রাজনীতির দুর্নীতি, সহিংসতা ও দলীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে। বিএনপির একাংশে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে তিনি ইতিমধ্যে শত শত বিতর্কিত কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র শুদ্ধি অভিযান যথেষ্ট নয়। তরুণদের জন্য স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও উন্নয়নভিত্তিক রাজনীতির মডেল দাঁড় করাতেই হবে।

উদ্যোক্তা সমাজের জন্য বার্তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত জরুরি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হচ্ছে, সেখানে উদ্যোক্তাদের জন্য রয়েছে অপার সম্ভাবনা — বিশেষ করে গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা, এসএমই খাত, ও স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে। তিনি যে মানবিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির কথা বলছেন, সেটি বাস্তবায়িত হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়বিচার একসাথে এগিয়ে যাবে।

উপসংহার: পুরনো দলের নতুন রূপ? তারেক রহমানের উত্থান শুধুমাত্র রাজনৈতিক পুনরাগমন নয়, এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি টার্নিং পয়েন্ট। তিনি যদি দলীয় সংস্কার, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারেন, তবে বিএনপি শুধু অতীতের একটি শক্তি নয়, ভবিষ্যতের জন্যও একটি প্রাসঙ্গিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে। এখন দেখার বিষয়—তারেক রহমান কেবল ক্ষমতায় আসবেন, নাকি ক্ষমতার সংজ্ঞাই নতুন করে লিখবেন।

EntrepreneurBD.com | নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের কথা বলে


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/3434 ,   Print Date & Time: Saturday, 11 October 2025, 01:08:07 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh