দেশজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে বিশৃঙ্খল করে তুলেছে। এই বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অবশেষে বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। “বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫” শীর্ষক একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, যেখানে নিবন্ধন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, মহাসড়কে এসব যান চলতে পারবে না। নির্দিষ্ট রুট ছাড়া চলাচল নিষিদ্ধ। সর্বোচ্চ গতি ধীরগতির যানবাহনের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৩০ কিমি এবং মধ্যম গতির ক্ষেত্রে ৫০ কিমি নির্ধারণ করা হয়েছে।
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি মধ্যম গতির এবং পাঁচটি ধীরগতির অটোরিকশার মালিক হতে পারবেন। পরিবহন কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫টি পর্যন্ত মধ্যম গতির রিকশার অনুমোদন মিলবে। অনুমোদনবিহীন কোনো যন্ত্রাংশ বা যানবাহন তৈরি কিংবা বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
বিদ্যমান সকল অটোরিকশাকে এক বছরের মধ্যে নিরাপদ মডেলে রূপান্তর করতে হবে। নতুবা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি রিকশায় মালিক ও চালকের ফোন নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চালকদের বিআরটিএ কর্তৃক ইস্যুকৃত বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে এবং প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
নীতিমালার আওতায় অটোরিকশার সংখ্যা নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট এলাকা ভিত্তিক যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি। স্থানীয় রুট ছাড়া কোনো যান চলাচল করতে পারবে না।
অবৈধভাবে চলাচলকারী রিকশা, ইঞ্জিনচালিত নৌযান বা কৃষিকাজের নামে ব্যবহৃত অযান্ত্রিক যানবাহন বন্ধে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।
সচিব এহসানুল হক বলেন, “বাস্তবতার আলোকে প্রস্তুত করা এই নীতিমালা চূড়ান্ত করার কাজ শেষ পর্যায়ে। এটি কার্যকর হলে দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলার অবসান হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
এই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত হলে দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে—নিরাপদ, শৃঙ্খলাপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রিত অটোরিকশা চলাচলের দিগন্তে।