প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ রোববার নৌবাহিনী সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ পর্ষদের মাধ্যমে দুটি বাহিনীর বিভিন্ন পদে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির কার্যক্রম শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পর্ষদটি সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে যোগ্য, মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নির্বাচন করবে। নৌবাহিনীতে ক্যাপ্টেন থেকে কমডোর, কমান্ডার থেকে ক্যাপ্টেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার থেকে কমান্ডার এবং বিমান বাহিনীতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন থেকে এয়ার কমডোর, উইং কমান্ডার থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন, স্কোয়াড্রন লিডার থেকে উইং কমান্ডার পদে পদোন্নতির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সেনাসদস্য, মুক্তিকামী জনগণ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে নৌ ও বিমান বাহিনীর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড. ইউনূস সুনীল অর্থনীতি, সমুদ্রসম্পদ আহরণ, গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালনা, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নসহ জাতীয় অগ্রগতিতে নৌবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি এমআইডিএ (মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়ন ও মানবসম্পদ গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ভবিষ্যতের যেকোনো সংকটে সংবিধান সমুন্নত রেখে বাহিনী দ্বয় জনগণের পাশে থাকবে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
নির্বাচনী পর্ষদের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশপ্রেমিক, মেধাবী, পেশাদার, মানবিক ও নৈতিক গুণসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নির্বাচনই হবে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ভিত্তি। তিনি এ ব্যাপারে নির্বাচন পর্ষদকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও দেন।
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কর্মস্পৃহা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সদর দপ্তর চত্বরে একটি বৃক্ষরোপণ করেন এবং নৌ, বিমান বাহিনীসহ দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কামনা করেন।