লন্ডন থেকে বিশেষ প্রতিবেদক
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কিছুটা কেটে গেল লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই বৈঠকে মিলিত হন। যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়—প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়ায় অগ্রগতি অর্জিত হলে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ভোট আয়োজন সম্ভব।
সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক, যুগান্তকারী ঘোষণা
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) থেকে শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টার বৈঠকে উভয় নেতা একান্ত আলোচনায় মিলিত হন। পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন—নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় হিসেবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ বিবেচনায় রয়েছে।
তাদের ভাষায়:
“যদি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় এবং বিচার ও সংস্কার যথাযথ অগ্রগতিতে পৌঁছায়, তবে রমজানের আগেই নির্বাচন হতে পারে।”
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কেটেছে?
অধ্যাপক ইউনূসের ৬ জুনের ভাষণে এপ্রিল ২০২৬-এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে লন্ডন বৈঠকে তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেন, রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজন হলে বিএনপি তাতে একমত। তার এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান অধ্যাপক ইউনূসও।
???? বিএনপি ও সরকারের প্রতিক্রিয়া
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন,
“এই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই। সময়মতো নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবে।”
অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় বলেন,
“জাতি দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেয়েছে। ইউনূস ও তারেক রহমান আশার বার্তা দিয়েছেন।”
❗ ভিন্নমত ও প্রশ্ন
যদিও এই সমঝোতা অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের কাছে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে, তবুও জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের মতো দলগুলো প্রশ্ন তুলেছে—
“সরকার কেবল একটি দলের সঙ্গে যৌথ ঘোষণা দিতে পারে কি না? এটি কতটা নৈতিক?”
এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধান সংশোধন, বিচার সংস্কার এবং জুলাই সনদ কার্যকরের আগে নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত করা অনৈতিক।
এখনো যেসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি
-
জুলাই সনদ এবং নির্বাচন কমিশন সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি কী?
-
বিচারপ্রক্রিয়া কতদূর এগোবে নির্বাচনের আগে?
-
অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা কবে?
ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা
বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী, নির্বাচনের আগেই নয়, পরেও রাজনৈতিক ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমীর খসরু বলেন,
“নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”