এবছর পাকুন্দিয়ায় দশ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা
বিশেষ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চারটি গ্রামে এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। দেশজুড়ে এখানকার লিচুর পরিচিতি থাকায় কাঙ্খিত দাম পাওয়ার আশা চাষিদের। এতে চারটি গ্রামে অন্তত ১০কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া, কুমারপুর, নারান্দী ও হোসেন্দীর একাংশে বহু বছর ধরে লিচুর আবাদ হয়ে আসছে। এরমধ্যে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু দেশজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। এই চার গ্রামের শত শত চাষিরা লিচুর চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকটি গ্রামেই অনেক পুরাতন লিচুর গাছ রয়েছে। কম খরচে যেহেতু বেশি টাকা আসে তাই এখানকার অনেকেরই মূল পেশা লিচু চাষ। চারটি গ্রামে কমপক্ষে ৭-৮ হাজার লিচুর গাছ রয়েছে। এ বছর কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বেচার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রসে টুইটম্বুর, ঘ্রাণ আর নজরকাড়া রঙের জন্য প্রসিদ্ধ এখানকার লিচু। অতুলনীয় এ লিচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। প্রায় দুইশ বছরের প্রসিদ্ধ এ লিচুর এখন ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। লিচুর মৌসুমকে ঘিরে গ্রাম গুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ।
উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২-৩ কিলোমিটার পূর্বে পাশাপাশি ওই চারটি গ্রাম অবস্থিত। লিচুর আবাদ বদলে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। লিচু চাষে ভাগ্য ফিরেছে এসব গ্রামের শত শত কৃষকের। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় লিচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এসব গ্রামের এখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোট-বড় অসংখ্য লিচুর গাছ। রাস্তার দুই পাশেও লিচুর বাগান। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে গোলাপি রঙের টসটসে লিচু।
এক সপ্তাহ ধরে শুরু হয়েছে লিচু বেচাকেনা। চলবে আরো সপ্তাহ তিনেক। দূর-দূরান্তের মানুষ আসছেন লিচু কিনতে। এলাকার আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসছেন লিচুর মৌসুমে। এখান থেকে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। স্থানীয়রা জানান, বংশ পরম্পরায় মঙ্গলবাড়িয়া, কুমারপুর, নারান্দী হোসেন্দী গ্রামের অনেকেই লিচুর আবাদে জড়িত। লিচুর আয় থেকেই চলে অনেক পরিবারের ভরণ-পোষণ আর সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ। মৌসুমের শুরুতে মুকুল আসার পরই চাষিদের কাছ থেকে কিছু গাছ কিনে নেন স্থানীয় ব্যাপারীরা। এরপর পরিচর্যা করে গাছের পাকা লিচু বিক্রি করেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুর-ই আলম বলেন, উপজেলার চারটি গ্রামে বহু বছর ধরে লিচুর আবাদ হয়ে আসছে। ওই চারটি গ্রামে প্রায় ৭-৮ হাজার লিচু গাছ রয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রামেই অনেক পুরাতন লিচু গাছ রয়েছে। এসব গ্রামের মধ্যে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু দেশজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। চারটি গ্রাম থেকে এ বছর ৮-১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।