• হোম > > করোনা সংক্রমণে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই বেশি।বিশ্বজুড়ে বিপর্যয় ডেকে আনছে

করোনা সংক্রমণে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই বেশি।বিশ্বজুড়ে বিপর্যয় ডেকে আনছে

  • সোমবার, ৫ জুলাই ২০২১, ০৮:৩৮
  • ৭৯৮

---

দেশে বিদ্যমান করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের মধ্যে ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র প্রাধান্য সুস্পষ্ট। গত মার্চে সিকোয়েন্সকৃত নমুনার ৮২ শতাংশে এ ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর এপ্রিলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে সঙ্গে আলফা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে। দেশে  এই ভ্যারিয়েন্ট মে মাসে ৪৫ শতাংশ ও জুন মাসে ৭৮ শতাংশ নমুনায় শনাক্ত হয়।

এসব তথ্য জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। রবিবার  প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

আইইডিসিআর বলছে, বাংলাদেশে ২০২০ সালের  ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিকোয়েন্স করা সব নমুনায় আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। মার্চ মাসে সিকোয়েন্সকৃত মোট নমুনার ৮২ শতাংশ বিটা ভ্যারিয়েন্ট ও ১৭ শতাংশ আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এপ্রিল মাসেও বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের মধ্যে বিটা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য ছিল।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষায় প্রাপ্ত ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কিত তথ্য জিনোম সিকোয়েন্সের বৈশ্বিক ডাটাবেজে জিআইএসএ আইডিতে জমা দেওয়া হয়ে থাকে। যে ধরনের ভ্যারিয়েন্টই হোক না কেন, তা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ একমাত্র উপায়। এর সঙ্গে ভ্যাকসিন নেয়া প্রয়োজন।

আইইডিসিআর জানায়, সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি পরিবর্তিত হয়ে নতুন চেহারা ও বৈশিষ্ট্য ধারণ করছে, যা ভ্যারিয়েন্ট নামে পরিচিত।

সংক্রমণের গতি রোগের জটিলতা (মৃত্যু হার ও হাসপাতালে ভর্তির হার), ৩ টিকা গ্রহণ পরবর্তী রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বিবেচনায় কিছু কিছু ভ্যারিয়েন্টকে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাইরাসটি ২০১৯ সালে প্রথম শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে এ রোগ শনাক্ত হওয়ার শুরু থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআর,বি ও আইদেশী যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গত ডিসেম্বর হতে জুন পর্যন্ত মোট ৬৪৬টি সংগৃহীত কোভিড-১৯ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ স নমুনায় কোভিড -১৯ এর আলফা ভ্যারিযৈন্ট (ইউকে-তে প্রথম শনাক্ত), বিটা ভ্যারিয়েন্ট (সাউথ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত), ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতে প্রথম শনাক্ত), ইটা ভ্যারিয়েন্ট (নাইজেরিয়াতে প্রথম শনাক্ত), বি ১.১.৬১৮ ভ্যারিয়েন্ট (আনআইডেন্টিফাইড) শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে বিপর্যয় ডেকে আনছে

ইন্দোনেশিয়ার বিপজ্জনক হারে বাড়ছে সংক্রমণ এবং সেইসাথে মৃত্যু

ভারত হয়তো আপাতত সংক্রমণের সর্বোচ্চ চূড়া অতিক্রম করেছে, কিন্তু সেদেশে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টটি প্রতিবেশী বাংলাদেশসহ এশিয়া এবং বিশ্বের বহু দেশকে বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ড. ট্রেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসুস শনিবার বলেন কমপক্ষে ৯৮টি দেশে ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।

ড গেব্রেইয়েসুস বলেন, “ভ্যারিয়েন্টটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটির কাঠামোগত এবং চারিত্রিক রূপান্তর ঘটে চলেছে।“

তিনি বলেন, নতুন এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি যেসব দেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম ভালো হয়েছে সেখানেও ছড়াচেছ।

ব্রিটেনে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে তার প্রধান কারণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। কিন্তু অক্সফোর্ডে রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক জেমস নেইস্মিথকে উদ্ধৃত করে লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা বলছে, পুরো ইউরোপ জুড়ে এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়বে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিণতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ঐ বিজ্ঞানী। “উন্নয়নশীল বিশ্বে এত কম মানুষ ভ্যাকসিন পেয়েছে যে তাদের সামনে চরম বিপদ অপেক্ষা করছে। ডেল্টা যখন ব্যাপকভাবে ছড়াতে শুরু করবে, দ্রুত ঐসব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিপর্যয় তৈরি হবে, যদি না দ্রুত টিকা কর্মসূচির প্রসার না হয়।।“

তিনি বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে, অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে এবং ডাক্তার নার্সরা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকহারে টিকা কর্মসূচি অব্যাহত থাকলেও ভারতীয় বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সেদেশেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

তবে বর্তমানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোকে, বিশেষ করে ভারতের প্রতিবেশীদের।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/2543 ,   Print Date & Time: Friday, 6 June 2025, 05:43:37 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh