• হোম > ইউরোপ | খেলা > বাঁচাতে পারল না সমারের হাত, সুইস রূপকথা শেষ করে সেমিফাইনালে স্পেন

বাঁচাতে পারল না সমারের হাত, সুইস রূপকথা শেষ করে সেমিফাইনালে স্পেন

  • শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১, ০৬:৫৩
  • ৭৩৮

জয়ের চেস্টায় স্পেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রাতটা ইয়ান সোমেরের মনে থাকবে বেশ। প্রথমে নিজের বীরত্বের জন্য। পরে দলগত হতাশার জন্য।

জার্মান বুন্দেসলিগা যারা মোটামুটি অনুসরণ করেন, ইয়ান সোমেরকে তাঁরা চিনবেন। গত সাত বছর ধরে বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের গোলবারের নিচে আস্থার প্রহরী হয়ে আছেন তিনি। এক বায়ার্ন মিউনিখের ম্যানুয়েল নয়্যার ছাড়া বুন্দেসলিগায় এই সোমেরের মতো ধারাবাহিক গোলকিপার হয়তো দ্বিতীয়টি নেই।

এতদিন জার্মান বুন্দেসলিগার দর্শকেরা এই কথা জানলেও, আজ জানল গোটা বিশ্ব। এই সোমেরের কাছেই আরেকটু হলে হেরে যেতে বসেছিল স্পেন। কিন্তু না, সেটা হয়নি। সোমেরের সতীর্থরাই সেটা হতে দেননি। রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকার শেষে তিনজন সুইস তারকা পেনাল্টি মিসের পর জয়ের হাসি হেসেছে ২০০৮ ও ২০১২ ইউরোর চ্যাম্পিয়নরাই।

ম্যাচে যথারীতি স্পেনেরই আধিপত্য ছিল। বলে দখল তাঁদেরই বেশি ছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে প্রতি আক্রমণে যখন উঠে যাচ্ছিল সুইসরা, স্পেন রক্ষণ বেশ ভালোই চিন্তায় পড়ে যাচ্ছিল তখন। ম্যাচের শুরু থেকেই সুইসরা একটু ব্যাকফুটে ছিল। নিয়মিত অধিনায়ক ও মাঝমাঠের সবচেয়ে বড় ভরসা গ্রানিত জাকা ছিলেন না, তাঁর জায়গায় নামান হয়েছিল সোমেরের ক্লাব-সতীর্থ ডেনিস জাকারিয়াকে। এই জাকারিয়ার কল্যাণেই প্রথমে এগিয়ে যায় স্পেন। ম্যাচের আট মিনিটে লেফটব্যাক জর্দি আলবার দূরপাল্লার এক শট এই জাকারিয়ার গায়ে লেগে দিক বদলে জালে জড়ায়।

প্রথমার্ধের বাকি সময়ে সুইসদের ওপর বেশ ভালোই ছড়ি ঘোরায় স্পেন। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জেরদান শাকিরির কল্যাণে বেশ কয়েকটা ভীতিজাগানিয়া আক্রমণও করে তাঁরা। কিন্তু শেষমেশ পেরে ওঠেনি। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে উইঙ্গার ব্রিল এমবোলোর চোট। ২৩ মিনিটেই মূল রিট ইনসাইড ফরোয়ার্ড এম্বোলোর জায়গায় নামানো হয় রুবেন ভারগাসকে। দ্বিতীয়ার্ধে আস্তে আস্তে স্পেনের ওপর প্রেস করে খেলা শুরু করে সুইসরা। এর সুফলও পায় তাঁরা। দুই সেন্টারব্যাক পও তোরেস ও এমেরিক লাপোর্তের ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ নিয়ে দলকে সমতায় ফেরান শাকিরি।

সমতায় আসার পর থেকে সুইসদের মনে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় যেন। কিন্তু সে আত্মবিশ্বাস ভাঙতেও সময় লাগেনি। ৭৭ মিনিটে বদলি স্ট্রাইকার জেরার্দ মোরেনোকে ফাউল করার দায়ে লাল কার্ড দেখেন মিডফিল্ডার রেমো ফ্রয়লার। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় মোরেনোকে ফাউল করা আগেই বলের দখল পেয়েছিলেন ফ্রয়লার। ফলে রেফারি মাইক অলিভারের এই সিদ্ধান্ত বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

একজন কম যেহেতু, সুইসরা এবার খোলসে বন্দী হয়ে যায়। আক্রমণভাগের সবচেয়ে বড় তারকা শাকিরিকে বসিয়ে তুলনামূলক রক্ষণাত্মক জিব্রিল সো-কে নামান হয়। লক্ষ্য একটাই, গোল খাওয়া যাবে না। আর এই লক্ষ্য পূরণে দলকে সবচেয়ে বড় সহায়তা করেছেন ইয়ান সোমের। দুর্দান্ত কিছু সেভ করেছেন। নিশ্চিত গোল খাওয়ার হাত থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন। দশ-দশটা সেভ করেছেন।

স্পেনের কোচ লুইস এনরিকের মুখে তখন রাজ্যের চিন্তা। সেমিতে যাওয়া হবে তো?

পেনাল্টি শুটআউটে সে চিন্তা কমাতে খোদ এগিয়ে এলেন সুইস তারকারাই। স্পেনের অধিনায়ক সের্হিও বুসকেতস প্রথম পেনাল্টি মিস করার পর যদি চিন্তায় পড়ে যান, সে চিন্তাও কমিয়ে দিয়েছেন দুই সেন্টারব্যাক ম্যানুয়েল আকাঞ্জি, ফাবিয়ান শায়ের ও উইঙ্গার রুবেন ভারগাস। প্রত্যেকে পেনাল্টি মিস করেছেন। ওদিকে তাই রদ্রির পেনাল্টি সোমের আটকে দিলেও স্পেনের সমস্যা হয়নি। মিকেল ওয়ারসাবালের পেনাল্টি জালে জড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিত হয়ে যায়, সেমিতে যাচ্ছে স্পেন।

তবে এই পারফরম্যান্সের পর সোমেরের ওপর বড় দলগুলোর নজর ভালোভাবে পড়বে, এটা নিশ্চিত!


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/2530 ,   Print Date & Time: Friday, 6 June 2025, 05:54:04 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh