• হোম > Agriculture & Food > ভারতে অনেকের ওয়ার্ক ফ্রম হোমেই কর্মজীবন শুরু, হাতে চাঁদ দেখছেন ওঁরা

ভারতে অনেকের ওয়ার্ক ফ্রম হোমেই কর্মজীবন শুরু, হাতে চাঁদ দেখছেন ওঁরা

  • শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০, ০১:৪৯
  • ৮১৮

ওয়ার্ক ফ্রম হোম

দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহু ছাত্রছাত্রী জীবনের প্রথম চাকরিটা শুরু করেছেন ‘বাড়ি থেকে অফিসে’র নিউ নর্মাল মেনে। কঠিন সময়ে নতুন চাকরিটা পরিজনেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে থেকেই কাজের আনন্দ যেন একটু বেশিই।

ওঁদের অনেকেরই উপলব্ধি, চাকরির সুবাদে অনেককেই পাড়ি দিতে হত অন্য শহর বা রাজ্যে।
থাকা-খাওয়ায় খরচ হত অনেক। সেটাও কিছুটা সাশ্রয় হচ্ছে।
সেই সঙ্গে চাকরির শুরুতে দুপুরে বাড়ির রান্না খেয়ে কাজে মন দিতে সুবিধাই হচ্ছে।

জয় সাহা

এমন বিশ্বব্যাপী মহামারী তো আগে দেখেনি কেউ। লকডাউন-পর্বে বাড়ি থেকে কাজে একটু একটু করে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়েছেন অনেকে। এই পর্বে এমন অনেকেও রয়েছেন, যাঁদের পেশাদারি জীবন শুরুই হল ওয়ার্ক ফ্রম হোম দিয়ে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহু ছাত্রছাত্রী জীবনের প্রথম চাকরিটা শুরু করেছেন ‘বাড়ি থেকে অফিসে’র নিউ নর্মাল মেনে। কঠিন সময়ে নতুন চাকরিটা পরিজনেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে থেকেই কাজের আনন্দ যেন একটু বেশিই।

ওঁদের অনেকেরই উপলব্ধি, চাকরির সুবাদে অনেককেই পাড়ি দিতে হত অন্য শহর। থাকা-খাওয়ায় খরচ হত অনেক। সেটাও কিছুটা সাশ্রয় হচ্ছে। সেই সঙ্গে চাকরির শুরুতে দুপুরে বাড়ির রান্না খেয়ে কাজে মন দিতে সুবিধাই হচ্ছে।

ডানকুনির বাসিন্দা, নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্সের চূড়ান্ত সেমেস্টারের ছাত্র কৃশানু সর্ববিদ্যা কলেজের প্লেসমেন্টে একটি নামী অনলাইন লার্নিং অ্যাপে চাকরি পেয়েছেন। ছোটবেলায় বাবা-দাদাদের সকাল-সকাল নাকেমুখে গুঁজে অফিস ছুটতে দেখে বড় হওয়া কৃশানু এখন দাদার সঙ্গেই বাড়িতে বসে অফিস করছেন। হাল্কা চালে বলছিলেন, ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সব থেকে ভালো দিক ফর্মাল পোশাকের বালাই নেই।’ তাঁর সংযোজন, ‘অফিসের জীবনটাকে সব সময়েই মনে হয়েছে ভীষণ সময় মেপে চলা। এখন বাড়ি থেকে অফিস করেও কাজের ফাঁকে পরিবারের দরকারে পাশে থাকতে পারছি। কম প্রাপ্তি নয়।’

শিবপুর আইআইইএসটি’র মনীশ কুমারেরও অভিজ্ঞতাও একই রকম। তাঁর কথায়, ‘অন্য যে শহরেই যেতাম, নতুন চাকরি, নতুন জায়গা নিয়ে প্রবল চাপে থাকতে হত। কিন্তু বাড়ি থেকে অফিস করে কাজ সম্পর্কে একটা ধারণা হয়ে যাচ্ছে। পরে যখন অফিস যেতে হবে, সুবিধাই হবে।’ জেআইএস গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার বিদ্যুৎ মজুমদারের পরামর্শ, ‘এই কঠিন সময়েও চাকরি যাঁরা পেয়েছেন, নতুন ভাবে নিজেদের তৈরি করুন। দ্রুত নিউ নর্মালে মেলাতে না পারলে কিন্তু সমস্যা।’
কল্যাণীর জেআইএস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে এমবিএ’র চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী সুপ্রীতি বিশ্বাস বিমা কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছেন সেলসে। এই পেশায় ক্লায়েন্টদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলারই চল। তবে সুপ্রীতিরা ভিডিয়ো কলেই কথা সারছেন। তাঁর আবার অভিজ্ঞতা, ‘অফিসের সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটে। কিন্তু ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ক্লায়েন্টদের হয়তো রাত আটটাতেও ভিডিয়ো কল করতে হচ্ছে।’ তবে ভালোই হচ্ছে বলে মত নৈহাটির তরুণীর। তাঁর কথায়, ‘দিনের নানা সময়ে চাপটা ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে।’ একই কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী খড়্গপুরের নন্দিতা গুপ্তা কিছুদিন গুরুগ্রামে গিয়েছিলেন ট্রেনিংয়ে। কাজ শুরু করেছেন বাড়ি থেকেই। তেমনই নারুলার আর এক ছাত্রী সমতা দাসও ট্রেনিংয়ে যানন চেন্নাইয়ে। ফিরে ওয়ার্ক ফ্রম হোমই করছেন। দু’জনেরই বক্তব্য, বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে শুরুতে অথৈ জলে পড়েছিলেন। এখন বাড়ি থেকে কাজে অভ্যস্ত হয়ে পরে বাইরে গিয়ে আর ততটা সমস্যা হবে না।

কাল, সোমবার থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম শুরু করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ইন্দ্রনীল পাল। তাঁর কথায়, ‘কোম্পানিও নতুন অবস্থায় যথেষ্ট চিন্তাশীল। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ল্যাপটপ পাঠাচ্ছে। সহকর্মীদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ হয়েছে। সিনিয়ররা দারুণ সাহায্য করছেন।’ বাড়ির পরিবেশে অফিস শুরুর মধ্যে অন্য রকম শান্তি খুঁজে পাচ্ছেন ইন্দ্রনীল।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/1916 ,   Print Date & Time: Saturday, 7 June 2025, 08:02:45 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh